দুপুরবেলা চিড়িয়াখানার আর সব খাচায় আটক অধিবাসীরা যখন ক্ষুধায় কাহিল হইয়া ঝিমায় তখন একমাত্র বান্দরের খাচার সামনে ভীড় থাকে। এই এক জাত এরা পেট খালি থাকলেও বিনোদন দিয়া যায় সমানে। দর্শকরা বাদাম, কলা, চিপ্স খাইতে খাইতে এগো বান্দ্রামী দেইখা আমোদ পায়।
তো হইসে কি, এই রকম এক দুপুর বেলা খাচার পাশে বেদম ভীড় দেইখা বান্দরেরা মন দিয়া ডিউটি করতেছিল। আই মিন লাফ , ঝাপ ডিগবাজী দিয়া মানুষরে আমোদ দিতেছিল। গন্ডোগল লাগাইলো এক তরুন বান্দর। মানুষরে বেশী বিশ্বাস কইরা ঝুলতে ঝুলতে সে গিয়া খারাইলো খাচার পাশে। পাব্লিক আমোদ পাইয়া তারে কলা বিস্কুট সাধলো, সে কলা খাইলো। পাব্লিক খুশিতে শীষ মাইরা উঠলো। তা দেইখা বান্দরেও মজা পাইলো। আরো কাছে আগাইয়া খারাইলো। অঘটন ঘটলো তারপরে। এক দর্শক হাতের নাগালে পাইয়া তার নুন্টু ধইরা দিল এক রাম চিপ্পি। ব্যাথায় বান্দরের জান বাইর হইয়া যাইতে নিসিল। বিশাল এক চিক্কুর দিয়া দূরে গিয়া স্বজাতির দলের পাশে গিয়া ভয়ে কাঁপতে থাকলো বেচারা বান্দর। অবাক হইয়া দেখলো, এত মানুষ তার এই ব্যাথা পাওয়া চিক্কুরে যেন আরো বেশী মজা পাইলো। নতুন কইরা ভীড় জমতে শুরু হইল। খাচার আরেকদিকে আরেক বয়স্ক পুরুষ বান্দরের অন্ডকোষ চিপ দিয়া ধইরা আরেক দর্শক মোবাইলে সেলফি উঠাইতে লাগলো।
দিশাহারা বান্দর এদিক ওদিক তাকাইয়া ঘটনা বুঝতে পারলোনা। কী হইতাসে এসব। ডাক দিয়া সব বান্দররে কাছে আইতে কইল। তারপর কঠিন গলায় কইল
"এইটা হইতে পারে না, আমরা দর্শকগোরে বিশ্বাস কইরা কত কসরত দেখাই। তাগোরে মজা দেওনের লাইগা কত কি করি। তারা আমাগো গোপোনাঙ্গে ব্যাথা দিতাসে ক্যারে ? তাগো তো এই অধিকার নাই"
দূরে বইসা বাচ্চার উকুন বাচতেসিলো এক আধা বুড়ি বান্দরনী। সে উইঠা আইসা খুব গম্ভীর গলায় কইলো-
"দোষ তো তোমাগো মিয়া। বুরখা পরনা ক্যান ? বুরখা পরলে তো আর এই আকাম ডা হইত না। রেগুলার বুরখা পরবা, আর হাতের নাগালে যাইবা না তাইলেই এই আকাম আর হইব না।"
তরুন বান্দর বুঝতে পারলো না বুরখার লগে এই নষ্টামীর যোগাযোগ কই। তার চেহারা দেইখাই বুড়ি বান্দর বুঝলো যে পোলা কনভিন্সড হয় নাই। তখন বুড়ি বান্দর কইল -
" যাগো লগে আকাম ঘইটা যায়, শাস্ত্রে তাগো পর্দা করার বিধান ছাড়া অইন্য তরিকা নাই, বুঝলা ???"
তারপর, বুড়ি বান্দর গুন গুন কইরা গান গাইতে গাইতে নিজের উকুন বাছার কামে ফেরত গেল -
সাবধানে থাকিও বাঁদর, পর্দার আড়ালে এ এ এ এ এ এ
কিতাবে হারাম বলে , অইন্যে দেখিলে ...
No comments:
Post a Comment