ধর্মের গন্ধ লেগে আছে এমন কিছু নিয়ে লিখতে গেলে কেমন জানি পেটে গুড়গুড় করে উঠে। অনেকটা হেরাফেরি সিনেমায় সরল সিধা সুনীল শেঠী কোনো গন্ডগোলে পড়ার আগে তার কানে গান বেজে উঠতো, আমারো তেমন। রাজশাহীর একটা কথা আছে - কারে লাইড়তে কাকে লাইড়ছো মামুর ব্যাটা !! আমার মনে এমন সাবধানবাণী বাজে। স্যাটায়ার করার জন্য ধর্মীয় উপকথা খুব রিস্কি এলিমেন্ট। ট্রাই নাইট্রো গ্লিসারিনের মত, সামান্যতেই দুম করে বার্স্ট !! আর মাশাল্লাহ, আমাদের দেশ তো এখন ধর্মের বীজতলা অনেক আগে থেকে বানানো। কে কোন সময় কুচ করে গলাটা নামায়ে ফেলে বাকি হাড্ডি হাড্ডি শরীরটা পুড়ায়ে ফেলে দেশী মুরগীর টিক্কা কাবাব বলে বেচে দিবে এর নাই ঠিক।
আমি একটা ফিউচার ফ্যান্টাসী বলি বরং। যারা বেহেস্ত-দোজখ, স্বর্গ-নরক, আদি-অন্ত অনন্ত নিয়া ভাবেন তারা ইন্টারেস্টিং ভাববেন। ভবিষ্যতের সাথে সামান্য যন্ত্রপাতি আর গণিত মিশাইতে পারলে, গল্পটাকে সায়েন্স ফিকশানই বলা যাইতো। কিন্তু এই গল্পে স্রষ্টা আছে, তবে তা নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের স্রষ্টা না। তাই গল্পটাকে ফ্যান্টাসীর গল্পই বলি।
পৃথিবী ধ্বংস হয়েছে। স্রষ্টা মোটামুটি সন্তুষ্ট। মানুষ বানানো এবং তাকে পৃথিবীতে পাঠানোর এক্সপেরিমেন্ট মোটের উপর খারাপ হয় নাই। বেশ এক্সাইটিং রেজাল্ট আসছে। মনে করলেই স্রষ্টার ভাল্লাগে। নাহ, জিনিস খারাপ বানান নাই । বহু কাহিনী করে, স্রষ্টার নিষেধ না মেনে এ্যাপলের কঞ্জুমার হয়ে গেল ( আইফোন এক্স এর লোভে না কিন্তু ) স্রষ্টা তাদের গেট লস্ট বলে এক্সপেল করে প্ল্যানেট আর্থে পাঠায়ে দিলেন। এর পর সাড়ে চার বিলিয়ন বয়সের সেই প্ল্যানেটে স্রষ্টার বানানো সেই মানুষ কত কী-ই না করলো। পেট আর চ্যাট এই দুই এর পীছে এত বিভোর হয়ে গেল সেই প্রজাতিটা যে প্রেডিক্টেবল ধংস ডেকেই আনলো একসময়। তবে এর মধ্যে এক্সেপশান ছিল। কনশাসনেস বলে একটা জিনিস স্রষ্টা দিয়ে দিয়েছিলেন এই প্রজাতিটার মধ্যে। সেটার যে কত দারুন ইউজ দেখালো এই প্রজাতিটা। নিজের কাজে স্রষ্টার মন ভাল হয়ে যায়। যাক এখন হাতের কাজ শেষ করতে হবে, বিচার টিচার করে দুষ্ট মানুষ আর ভাল মানুষ কে যার যার প্রাপ্য বুঝায়ে দিয়ে হেভেন আর হেলে একোমোডেট করে দিবেন।
বিচার শেষ। কিছুদিন পর স্রষ্টার আবার মনে হয়, ধুর, কাজকর্ম নাই এভাবে হয় নাকি ? গ্রেট ইউনিভার্সের একমাত্র অলমাইটি তিনি। ছোট ছোট সৃষ্টি, বানায়ে বিলীন করে আবার না বানালে সময় কাটে না তো। এই মানুষ বানানোর আগে ফায়ার ফর্ম দিয়ে ফাইভ ডাইমেনশনাল ক্রিয়েচার "জীন" বানানোর এক্সপেরিমেন্টটাও বেশ ভেজাইল্লা ছিল। আগেরবারের ফায়ার স্পেশিস খুব বেয়াড়া চীজ ছিল। তাই পরের বার মডেল বানানোর সময় ফায়ার ইউজ না করে মাটি ইউজ করসেন। ফায়ার স্পেশিস বিগড়াইলে খুব খতরনাক হয়। ভেজাল করে। তার চেয়ে মাটি মুটি দিয়ে বানানো সেইফ।প্রতিবার এক্সপেরিমেন্ট থেকে পরের ব্যাচে তিনি কিছু কারেকশান করে নেন। সেটার রেজাল্ট এক্সপেটেশান মীট করে কিনা দেখার অপেক্ষাটায় বেশ আরাম আছে কিন্তু। স্রষ্টা ছাড়া এমন সুখ পাবার সুযোগ তো আর কারো নাই। স্রষ্টার হঠাত মনে হল, এক কাজ করলে কেমন হয় ? গতবারের এক্সপেরিমেন্টকে রিএ্যারেঞ্জ করে আবার রান করলে কেমন হয়?
যেমন ইচ্ছা তেমন কাজ।
আবার একটা প্ল্যানেট বানানো হল। আগুন দিয়ে, বাতাস দিয়ে, পানি দিয়ে সেটাকে টেম্পার করা হল। সব রকম সাপোর্টিভ স্পেশিস দিয়ে সেই প্ল্যানেট ভরা হল। এবং ফাইনালী সেই বিশেষ স্পেশিস "হিউম্যান" আবার বানানো হল। তবে এবার বুকের হাড্ডি ফাড্ডি না। স্রষ্টা খুব কায়দা করে আগেরবারের মূল সমস্যাটা এবার ক্র্যাক করে দিলেন। স্পেশিস টা আগের মতই হল। দুইটা ফর্ম। মেইল আর ফিমেল। রি প্রোডাকশান প্রসেসের জন্য মেইল বডি স্পার্ম ক্যারী করবে । আর ফিমেল বডি ওভারী। তবে আগেরবারের সব গ্যাঞ্জামের সুত্রপাত যেই স্পার্ম এর থলি থেকে, সেই বলজোড়া , যা আগের বার মানবজাতীর এক অংশের সব গর্ব আর দাপটের প্রতিক হয়ে দাড়াইছিলো, সেগুলাকে প্রিইন্সটল করে দিলেন না। আগের বার হাড্ডি ম্যাচ করা থিউরী কাজ করে নাই এটা ইনভিজিবল বা হিডেন ছিল বলে, এইবার সেরকম কিছুর চান্সই দেয়া যাবে না। এইবার এ্যাডাম ভারশান ২.০ এর মেশিন তিনি ধরায়ে দিলেন ঈভ ভারশান ২.০ এর হাতে। ইন্সট্রাকশানও দিলেন খুবই ক্লিয়ার । ভারশান ২.০ মডেলের জোড়াকে এলাইভ করে দিয়ে স্রষ্টা গলা খাকারী দিয়ে পরিষ্কার করে বল্লেন -
শোনো বালক ও বালিকা,
তোমাদের যা দরকার সব সহ তোমাদের পৃথিবীতে পাঠাচ্ছি। তোমরা অনেক বড় উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবনা চিন্তা করবা, তুচ্ছ মোহময় চিন্তায় নিজেকে করাপ্ট করে ফেইলো না। আর ডেভিল নাস্তিক মাদার ফাকার যতই বুঝাক, নিজের ইন্সটিংক্ট বুইঝা কাজ করবা। কনশাসনেস কাজে লাগাবা। এত কিছু বলতেসি, বাট আই নো ইউ গাইজ উইল ফরগেট সুন, তাই ফর দা সিকিউরিটি রিজন এ্যাডাম ২.০ এর মেশিন থাকবে ঈভ এর কাছে। যখন এ্যাডাম ঈভকে রিয়েলাইজ করাইতে সক্ষম হবে যে সে মেশিন আর মেশিনের বিয়ারিং ডিজার্ভ করে, অনলি দেন, ঈভ তাকে মেশিন ইন্সটল করে দিবে। তারপর রিপ্রোডাকশান বা প্লেজার পারপাস মেশিন রান করা যাবে। আর এক মেশিন একাধিক ঈভ রিসিভ ও করবে না, কোড না মিললে মেশিন শুধু ইউরিনেশান পারপাসে হ্যাং হয়ে থাকবে। বাই দা ওয়ে, লাস্টবার এডাম এর বংশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করসে প্ল্যান্টদের। নানা উসিলায় গাছ কাটসো, হিসাব ছাড়া, এই বানাবো, ওই বানাবো, রাস্তা বানাবো। আর প্রসেস ইজি বলে যেখানে সেখানে, রাস্তার পাশে দেয়াল পেলেই মুতসো। তাই এইবার তোমাদের ইউরিন, প্ল্যান্ট ফ্রেন্ডলি করে দিলাম। যেখানেই মুতবা, গাছ গজাবে। এই নিয়ম এ্যাডাম পরবর্তি সব মেইল স্পেশিস এর জন্য প্রযোজ্য হবে। ওকে ? লাস্ট টাইম প্রি-ইনস্টল্ড মেশিন নিয়া খুব ক্যাচাল করসো তোমরা। আই ডোন্ট ওয়ান্ট এনি ক্যাওস দিস টাইম ইন দিস ইশু।
শয়তান দুরে বসে চিন্তায় পড়ে গেলো। এতো কঠিন প্যারাডক্স হয়ে গেল। ক্যামনে কি ? মেশিনই যদি না চলবে তাহলে ক্যাওস লাগানোর কী পাওয়া যাবে কোথায় ? শুধু পেটের খিদাকে উপলক্ষ করে এই ছোট্ট একটা প্ল্যানেটে ২০৮ দেশ আর ৬০০ কোটি মানুষের মাঝে অস্তিত্ব রাখমু কেম্নে ? আর বিলিয়ন বিলিয়ন স্পেসিমেন্ট এর মধ্যে ক্রাইম রেট স্টেডি রাখার ও তো একটা চ্যালেঞ্জ আছে। ধুর এইডা কিছু হইল ? মালই যদি মাথায় না উঠাইতে পারলাম তাইলে শয়তানীটা করমু কেমনে ?
হঠাত শয়তান খেয়াল করলো তার মাথায় একটা অদ্ভূত মেশিন ইন্সটল্ড হয়ে গেল। সে দেখলো তার মাথায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে মানুষে বিভেদ সৃষ্টির চিন্তা সিষ্টেম সফটওয়্যারের মত ইনস্টলড। সে ভাবলো যেহেতু আমি স্রষ্টার সিষ্টেমে চলি সেহেতু দুষ্টামি করাই আমার ধর্ম। আর সেই ধর্মের বাহানায়, মাটির পুতুলের পুরুষ মূর্তি, নানা রকম ফায়দা ফিকির বের করে এর নারী মূর্তি অংশকে জব্দ করে রাখলো। বলা যায় এর আলটিমেট ডেসটিনেশানের মানেই ঘুরায়ে ফেলল কয়েক বার। মাটির পুতুল, পুরুষ মূর্তি, নানা রকম ফায়দা ফিকির, ইবাদত বন্দেগী বের করে নারী অংশকে জব্দ করে রাখলো। সাথে দিল প্লেজার সিকিং এর ধান্ধা। বলা যায় এর আলটিমেট ডেসটিনেশানের মানেই ঘুরায়ে ফেলল । আর এইগুলার মার্কেটিং ইউনিক। আবার ভাবলো তয় স্রষ্টার মহাগ্রন্থগুলা কী ? কেন আইলো ? এইটা দিয়া কি করুম; আবার ভাবলো আমার লাইগ্যাই কি আইলো ?
দুর থেকে স্রষ্টার হাসি শোনা গেল।
ডেভিল, উত্তর খুইজা লাভ নাই, তোমার মেশিন অটোমেটেড; ইয়্যুর থিঙ্কিং ইজ অলওয়েজ অন ইয়্যুর রাইট ট্র্যক। তোমার কোনো ম্যাচ নাই। তুমি নিজেই প্লাগ, নিজেই সকেট। এপ্লাই অন ইউরসেলফ।
No comments:
Post a Comment