Sunday, July 8, 2018

আপোষকামী ভদ্রলোক

আমার কাছে ভদ্রলোক মানেই আপোষকামী মনে হয়। গত  তিনদিনে মোশারফ করিম ইস্যুতে নাট্যপাড়ায় অনেক ভদ্রলোকের জন্ম হয়েছে, ঠিক যতটা ভদ্রলোক জন্ম হয়েছে গাজী রাকায়েতের লাম্পট্যকে ডিফেন্স করতে। PK-র রাজকুমার হিরানি, OMG-র উমেশ শুক্লা থেকে শুরু করে হাল সমাজের জাফর ইকবাল বা মোশারফ করিম সকলেই কিন্তু ইচ্ছে করলেই স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারেন না। কারন এখানে সামাজিক অর্থনৈতিক নিরাপত্তার সাথে ভাবমূর্তির ব্যাপারস্যাপার জড়িত। এসব ভদ্রলোকদের ধর্মীয় ম্যাস মেন্টালিটিই সীমানা টেনে বেঁধে দিয়েছি তাদের আপোষকামী জীবন প্রণালী। নিজের ভঙ্গুর মানসিক শক্তি দিয়ে হাটুবিদ্যের সীমা ডিঙ্গানোর চেষ্টাকে বাকী সবাই মিলে চেপে ধরে টেনে হিঁচড়ে নিজের দলে টেনে আনার একটা নোংরা চর্চায় আছে এরা। পেটে বিদ্যের তারতম্য হলে যা হয় আরকি।
লোকে ভাল বললে তবেই  এরা ভাল থাকে, এর আগ পর্যন্ত  যত ভালই থাকুক না কেন, তাদের নিজের উপরেই নিজের কনফিডেন্স থাকেনা। শুধু যে কনফিডেন্সের অভাব এটাও একমাত্র সমস্যা না, আরো বড় সমস্যা হচ্ছে, তারা  অন্যের সবকিছুতেই জাজমেন্টাল হবার অধিকার দাবী করে। অন্যে কি করে, কেমনে করে, কেন করে, তার সব কিছুতেই নাক গলাতে হবে তাদের। মোটাদাগে যদি বাংগালী ধার্মিক ভদ্রলকদের সমাজের একটা চিত্র আঁকা হয় তাহলে ছবিটা দেখতে হবে এমন-
সারিবাঁধা মানুষ, কিন্তু কারো চেহারা দেখা যাচ্ছে না। চেহারা দেখে কাউকে আলাদা করে চেনার উপায় নাই, কারন প্রত্যেকে নিজের নাক সহ আস্ত মাথাটাই গুঁজে দিয়ে রেখেছে সামনের জনের পাছার ভিতরে।
এবার যদি দেখা যায় রাস্তায় একটা মেয়ে হেটে যাচ্ছে তাদের পাছায় ছ্যাকা লাগে। মেয়েদের কাপড় এর উপর তাদের যৌন নিরাপত্তার দায়ভার ঠেলার চেষ্টা করা লাগে।
কোন মেয়ে কারো সাথে হেসে কথা বললে তাদের পাছায় আবার ছ্যাকা লাগে। তখন তারা নির্ধারন করে দেয়  নির্ধারন করে দেয়, কে বেশ্যা, কে জাউরা, কে কুলাংগার, কে খুব ভাল, কে সমাজে থাকার যোগ্য না।
ছ্যাকার মাত্রা আরো বেড়ে যায় যদি সন্ধ্যারাতে বিরে যায়।  পতিতাদের বিশেষনে এদের কথা শুনলেই ঘেন্নায় নাক সিটকায়, অথচ সমাজে পতিতাদের ধর্ণাদারদের পরিচয় খুজতে গেলেই বুকটা কতই না গর্বে ফুলে ঊঠে। 

প্রযুক্তি বদলায়, সমাজের গতি বদলায়, কিন্তু "খাসলত" বদলায় না। খাচ্চরগুলো পেটে থাকা বর্জ্যের এর মত, সমাজে থেকেই যাবে মনে হয় সারাজীবন। 

No comments:

Post a Comment