Monday, August 27, 2018

আমাদের নিজেদের মানুষ ভাবার জন্য এই শিক্ষাব্যবস্থা কি যুক্তিযুক্ত?

মানুষ এক প্রকার জীব।
জানেন তো সবাই, ক্লাস থ্রি তে পড়েছেন। ভোলার কথা না।
বিশ্বাস করেছিলেন ?
সবাই করতে পারে নাই।
দেশের সবগুলা শিক্ষা পর্ব উতরানো সার্টিফিকেটধারী কিছু হনুমান আছে যারা ক্লাস থ্রিতে পড়া ওই শিক্ষাটা নিতে পারে নাই। তাদের কনসেপ্টে মানুষ এক নয়, দুই প্রকারের জীব।
নর মানুষ, নারী (ঊন) মানুষ।
এরা আর কোন জীবের বেলায় বৈষম্য করে উঠতে পারে না। মানুষের বেলায় পারে।
মানুষ জগতের অন্য জীবের বেলায় কিভাবে আলাদা ?
সব জীব জন্ম থেকে মরা পর্যন্ত র‍্যাশনাল ভ্যালুজ প্র্যাকটিস করে, কিভাবে বাঁচতে হবে, খেতে হবে, বংশ বিস্তার করতে হবে। ব্যাস ।
শুধু মানুষ র‍্যাশনাল ভ্যালুজের উপরে গিয়ে ইমোশনাল ভ্যালুজের চর্চা করে। সেসবকে আমরা মানুষের সভ্য গুণ বলি।
গুণ কি অন্য প্রাণীর নাই ? আছে। কুকুর প্রভুভক্ত , বিশ্বাসী হয় ।
গরিলা সাহসী হয়।
চিতা দ্রুত হয়
শিয়াল চালাক হয়।
মজার ব্যাপার কি জানেন ? এইসব গুণ কিন্তু ঐ প্রজাতির জীবের নর- নারী প্রভেদে আমরা বিচার করি না
সব কুকুর ই বিশ্বাসী বলে আমরা মেনে নেই
সব শিয়ালই চালাক বলে আমরা ভাবি।
শুধু মানুষের বেলায় একটা কাহিনী আছে
সততা, ন্যায়পরায়ণতা, বীরত্ব, ধৈর্য্য এমন ইউনিসেক্স গুণাবলীর বাইরে খুবই স্পর্শকাতর একটা ফেইক গুণ আমরা বানিয়েছি। এই গুনের দুষ্ট শিক্ষা এখন আমাদের বোঝার সময় আসছে।
এই গুনের নাম "ভার্জিনিটি" বা সতীত্ব ।
মানুষের ভেতর শুধু মেয়েদের এই গুনে গুণবতী হতে হয়।
পুরুষ জাতির এই গুনের দায় নাই।
এই এক কুশিক্ষা মাথায় ভরে আমরা দেশ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু মনুষ্যত্ব ধরতে পারছি না।
এখানে ওখানে কাছে দুরে, পরিচিত অপরিচিত অমানুষের দেখা পেয়ে যাচ্ছি।
ধর্ষণ এর মত সামাজিক সমস্যা সমাধান করতে হলে আমাদের একটু গোড়ার দিকে তাকালে আমরা বুঝতাম সমস্যা একা ধর্ষকের না। সমস্যা আমাদের সামাজিক শিক্ষায়।
এই সমাজ আমাদের শেখায়, মেয়েরা বিয়ের আগ পর্যন্ত নিজের শারীরিক সঙ্গী বেছে নেয়ার অধিকার রাখে না। যৌনতা যেখানে একটা প্রাকৃতিক নিয়ম, এর আবেদনে নর-নারী উভয়েই সাড়া দিতে চাইবে, সেখানে ভার্জিনিটির লোড একা নারী কেন মাথায় রাখতে হবে ? কেউ বুঝাতে পারবে ?
পুরুষের কেন ভার্জিনিটির প্রেশার নিতে হয় না ?
নারীকে সম্ভোগের স্বাধীনতা না দিয়া, নারীকে সম্ভোগের পণ্য বিবেচনা করার এই নিয়ম যতদিন আছে ততদিন হাজার আইন কানুন, হাজার সভ্য বচনে নারীসম্মান রক্ষা করার চেষ্টা কাজ করার কথা না।
পুরুষ শাসিত সমাজে পুরুষের যৌন চাহিদা মিটানোর জন্য নারী যৌনকর্মী আছে, নারীর কি চাহিদা নাই ? তাহলে পুরুষ যৌন পল্লী নাই কেন ?
যদি সমান সমান বিবেচনা করার শিক্ষা আমাদের থাকতো, তাহলে প্রতিটা ধর্ষনের পর কিছু হনুমান প্রতিবার বলতে পারতো না
- কাপড় ছোট পরসে বলে ধর্ষিত হইসে
- রাতে একা ছিল বলে ধর্ষিত হইসে
- ছেলেদের সাথে মিশছিল বলে ধর্ষিত হইসে
- মেয়েটাকে আকর্ষনীয় লাগতেসিল বলে ধর্ষিত হইসে

নারী কেন ধর্ষিত হয় ?
নারী দূর্বল বলে ? কেন , সব পুরুষ কি সবল ? কই, কোন ক্ষীনকায় পুরুষ তো সন্ধ্যার পর শর্টস পরে সিগারেট কিনতে নামার পর দুই তিনজন বলিষ্ট নারী দ্বারা ধর্ষিত হয় নাই।
নারী আকর্ষনীয় বলে ?
কখনো শুধু বেশি হ্যান্ডসাম বলে কোন ছেলের পাছায় চিপ দিয়েছে কোন মেয়ে লিফটের ভেতরে ?
নারীসংগ বিরল বলে ?
হ্যাঁ, এইটার বেলায় বলতে হয়, নারী বর্জিত স্থানে পুরুষও অন্য পুরুষের ভোগ্যবস্তুতে পরিণত হয়।

বিকৃত শিক্ষাকে ধর্মীয় যুক্তি দিয়ে মোড়ক জড়ায়ে আমরা যেই সামাজিক শিক্ষাকে বৈধতা দিচ্ছি, সেই শিক্ষাই মেয়েদেরকে শেখাচ্ছে তার ভার্জিনিটির উপযুক্ত মূল্য দিতে একটা ছেলেকে অনেকদূর দৌড়াতে হবে, তার কাছে এমন কিছু আছে যা খুবই মূল্যবান, পুরুষ কে অনেক সাধনা করে সেই সম্পদ অর্জন করতে হবে। তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে আনএভেইলেবল হয়ে থাকতে হবে। তার যৌনাঙ্গ পাহারা দিয়ে রাখার ভার তার নিজের কাঁধে।
আর ছেলেদের শেখাচ্ছে, তার যৌনাঙ্গ স্বাধীন, যৌনসংগী নির্বাচন করার ক্ষেত্রে তার যে কোন পন্থা অবলম্বন করার চেষ্টা অস্বাভাবিক না, কারণ সে নিজে কখনো বিপরীত লিঙ্গের নির্বাচিত যৌনসংগী হবার কপাল রাখে না । তাকে যে কোন ভাবে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে যৌনসংগী লাভ করতে হবে।

আনোথারাইজড সেক্স আর মিউচুয়াল সেক্স এর মাঝখানে শুধু একটা হ্যাঁ এবং না এর ফারাক।
আর যতদিন এই অনুমতির জন্য শুধু বিয়েই হবে একমাত্র চাবি, ততদিন এই সমস্যার আসলে খুব একটা পরিবর্তন হবে না। বিয়ের মতন ব্যায়বহুল, দীর্ঘমেয়াদী সিদ্ধান্তের বিপরীতে জোর করে "না" কে দুমড়ে মুচড়ে সাময়িক চাহিদা মেটানোর বিকৃত সিদ্ধান্তের পথে আসলে সামাজিক শিক্ষাই এক শ্রেণীকে ঠেলে দেয়।

সামাজিক শিক্ষার পরিবর্তন না হলে,
নারীকে সীসার বাক্সে ভরেন, আর  নারীবাদীরা ধর্ষকের লিঙ্গ কেটে হাতে ধরিয়ে দেয়ার কথা যারা বলেন, কোন পক্ষই সুফল পাবেন না। এই সমাজে রেপ হবেই। ধর্ষকের যৌনাঙ্গ কাটলে লাভ নাই। তার মস্তিষ্কটাই যৌনাঙ্গ হয়ে আছে ভুল সামাজিক শিক্ষায়। আর সবচেয়ে বড় আশংকার কথা হল, ধর্ষক হচ্ছে এই একই ভাবধারায় চিন্তা করা একটা বড় গোষ্টির প্রতিনিধি, যে শেষমেষ ঘটনাটা ঘটিয়ে ফেলে কোনোভাবে। বাকিরা যারা তা পারেনা। তারা শিয়ালের পালের মত রেপিস্টের দোষ ঢেকে মেয়েটার উপর রেপের যতখানি দায় ঠেলে দেয়ার চেষ্টায় নেমে পড়ে।

সেক্সুয়াল এডুকেশানের কথা অনেকে বলেন, কিন্তু সেই এডুকেশানেও শেখানো হয় শুধু  কিভাবে যৌনসম্পর্কে সন্তান জন্ম নেয়। তা সামাজিক জীবনে খুব একটা কাজে দেয় না। এটা এমনিতেই মানুষ শিখে যায়। যেটা দরকারি সেটা না শিখে,  বেশিরভাগ মানুষের সেক্স এডুকেশান হয়ে দাঁড়ায় পর্নগ্রাফী। আর সেটা দাঁড়ানো বিশাল একটা ভুল তত্বের উপর। তীব্র পুরুষতান্ত্রিক যৌনতার পার্স্পেক্টিভে।
টিন এইজে বিকৃত সেক্সুয়াল ফ্যান্টাসীতে ভোগা কিশোরকে কেউ কখনো শেখায় নাই, যে অর্গাজমিক প্লেজার যদি তুলনার বিষয় হয়, একটা মেয়ের ক্ষমতা একটা ছেলের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। যদি একটা ছেলে এই প্লেজারের জন্য একটা মেয়েকে জোর করে, একটা মেয়ে চাইলে কয়েকটা ছেলেকে জোর করতে পারবে, প্রকৃতিই তাকে সেই ক্ষমতা দিয়ে দিয়েছে।

যারা ধর্মীয় যুক্তিতে নারীর দূর্বলতার পক্ষে প্রমাণ কুড়িয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে বলার চেষ্টা করে যে, একটা রেপে মেয়েটারও দোষ আছে, তারা আদম এর বংশজাত মানুষ বলেও নিজেদের দাবী করা উচিত না। তাদের বিশ্বাসের গোড়ায় আদম কে প্রথম সৃষ্টি করার পর আদমের তেঁতুলের নেশা মেটানোর জন্য হাওয়াকে বানানো হইয়েছিলো, এমন কোন ধর্মবাণী কি আছে ?  

Sunday, August 26, 2018

মীথ

সীতার মেজাজ খারাপ।
মেজাজ খারাপ হবার যথেষ্ট কারণ আছে। কথা নাই বার্তা নাই, দুম করে রাবণ তাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে আসছে। প্রাসাদ ভরা রাণী, বিনোদিনী তারপরেও এত ঝাই ঝামেলা করে জংগল থেকে তাকে তুলে আনসে রাবণ। প্রথমে সীতা ভাবসিলো রাবণের মনে খারাপ মতলব আছে। কিন্তু কিছু সময় যাবার পর সীতা বুঝতে পারসে রাবণ তার সাথে মেক আউট টাইপ কিছু করার ধারে কাছে নাই।  সীতার হাজবেন্ডের সাথে পুরানা গ্যাঞ্জাম আগুন দিয়ে চাংগা করার জন্য তাকে কিডন্যাপ করসে। শালা গবেট। বউ উঠায়ে আনসে, এখন বইসা বইসা মোঁচে তা দিতেসে জামাই আসবে উদ্ধার করতে, আর সে জামাইরে কইষা চিপা দিবে। আরে বালটা, তোর গ্যাঞ্জাম রামের সাথে। হ্যাডম থাকলে বস্তার মধ্যে রামরে ভইরা তুইলা আনতি। সাথে সুতা বান্ধা লক্ষণ আর ল্যাঞ্জা বান্ধা হনুমান ও আইসা পড়তো। কাজ পায়না। সীতা প্ল্যান করে ফেলসে। আজকে ডিনার দিতে আসবে যখন, চৌকীর পায়া ভাংগা কাঠ দিয়ে বাইড়াইয়া কাজের বেটিরে বেহুশ করে, সীতা পালানোর একটা ট্রাই করবে। ক্যাওস বাঁধায়ে দেয়ার জন্য আগুন লাগানোর উপর জিনিস হয় না। সীতা অলরেডী এক গার্ডের কাছ থেকে ম্যাচ মাইরা দিয়ে লুকায়ে রাখসে। একবার রুম থেকে বের হইতে পারলে জানালার পর্দায় আগুন লাগায়া দিবে, হাউকাউ শুরু হবে, এই চান্সে সীতা কালটি মেরে ভাইগা যাবে। রামের আশায় বইসা থাকার কোনো মানে নাই।

রাম যতক্ষনে লংকা এটাক করে রাবণের ফোর্ট দখল নিসে নানা সিস্টেম করে, হনুমানের ল্যাজের আগুন, বিভীষণের স্পায়িং ইত্যাদি করে, ততক্ষনে সীতা ফ্রি জোনে। রাবন রে ধইরা রাম যখন কলার ধইরা ঝাঁকাইয়া জিগাইলো "হয়্যার ইজ মাই ওয়াইফ?" রাবণ খ্যাক খ্যাকাইয়া হাইসা কইলো, "ইউ আর লেট ম্যান। তোমার বউ ম্যালা ফাস্ট, একাই ভেগে গেসে তুমি আসার আগে। গো ফাইন্ড সামহয়্যার এলস"। রাম মাথা চুলকায়ে ভাবতেসে বউ কই যাইতে পারে...

ট্রয় শহরের বাইরে, আগামেনন তার চৌদ্দ গুষ্টি নিয়া ঘিরা দিয়া বইসা আছে।
আগামেননের ভাই মেনেলাউসের বউ হেলেন ভাইগা আইসা পড়সে ট্রয়ের যুবরাজ প্রেমিক প্যারিসের লগে। মহল্লায় মুখ দেখানোর উপায় নাই। আগামেনন মহল্লার সব হ্যাডমরে একসাথে নিয়া মেশিন মুশিন সহ আসছে প্যারিসের মহল্লা এটাক করতে। হালার পো ডরপুক প্যারিস দরজা মরজা আটকাইয়া খাটের তলে হান্দাইয়া বইসা আছে। টাইম যাইতাসে, খরচা বাড়তাসে আগামেননের মেজাজ ফরটিনাইন।
ট্রয়ের রাজদরবারে মিটিং বসছে। প্যারিসের কাজিন হেক্টর একটু চাঙ্গা মাঙ্গা আছে। হ্যাডম ও আছে। সে আগামেননের মহল্লার একিলিস রে চ্যালেঞ্জ কইরা বইসে ওয়ান টু ওয়ান ফাইট করার লাইগা। যেয় জিতবো হেয় ডিসাইড কইরবো হেলেন কার বউ। সবাই মিউ মিউ কইরা মাইনা ও নিসে।
হেলেন এতক্ষন কিচ্ছু কয় নাই। ফাইজলামী করে নাকি এরা? আরে আমার মন চাইসে আমি আগের জামাইয়ের সাথে থাকুম না, এই নিয়া মহল্লা ধইরা পোলারা ক্যাচাল করবে। তারা তারা মারামারি কইরা ডিসাইড করবে। এইডা মাইনা নেয়া যায় কেমনে? হেলেন উইঠা দাঁড়ায়া কইলো "থামেন "
মেনেলাউসের বউ ছিলাম আমি। আমারে নিতে আইসা আগামেনন গুষ্টি সুদ্ধা লোকজন নিয়া গ্যাঞ্জাম করতেসে। আপনেরাও এই গ্যাঞ্জামে হান্দাইবেন কেমনে চিন্তা করতেসেন। এইসব বাদ দেন। ওয়ান টু ওয়ান আমি কথা কমু মেনেলাউসের লগে। গেট খুলেন।
ট্রয়ের গেটের বাইরে আগামেননের লোকজন চা চু খাইতেসিল। গেট খুইলা হেলেন বাইর হইয়া আইলো একা। আগামেনন চিল্লাইয়া কইলো " ঐ মেনেলাউস তোর বউ বাইরাইসে, উডাইয়া লইয়া দৌড় দে"
হেলেন কইলো "তুই চুপ কর বলদ"
তারপর মেনেলাউসের দিকে তাকায়া কইলো
"তোর শরম করে না ? তোর বউ তোরে ফালাইয়া আইসা পরসে, আর তুই মহল্লার গুষ্টি যোগার কইরা আইছস পীছে পীছে ? বিচি আছে তোর ? বউ রে ভালোবাসতে বিচি লাগে। বুঝছস ? ভালোবাসতে পারলে আইজকা আমি হেলেন তোর লগে তোর প্যালেসে থাকতাম। প্যারিস আমারে ভালোবাসে, আমি প্যারিস রে বাইছা নিসি। তুই এক্ষন তোর পোলাপাইন লইয়া এইখান থেকে যাবি। গুন্ডা পান্ডা লইয়া বউ উঠাইতে আইছস। শরমে মইরা যাওয়া উচিত তোর।

মেনেলাউস মাথা নীচু কইরা আগামেনন রে কইলো "ভাই চল যাইগা। এলাকার মানুষের সামনে বেইজ্জত কইরা দিল" । একিলিস মাথা চুলকায়া কইলো "ক্যাম্নে কি ? হেক্টর হম্মুন্দীর পুতে যে আমারে চ্যালেঞ্জ দিল হেই গ্যাঞ্জাম ফাইনাল করুম না ? এমনেই যামুগা ? এই মেনেলাউসের বউ এর দুইডা চিল্লান খাওনের লাইগা এদ্দুর আইসি নাকি ? আমি যামুনা । হেক্টর রে ঘাড়ামু তারপর এহেন্তে লড়ুম"

হেলেন কইলো " খুব সেয়ানা হইসো ? গ্যাঞ্জাম করতে চাও করবা, আমার ইশু বাদ দিয়া সারাদিন তুমি আর হেক্টর কুস্তা কুস্তি কর । মানা করসে কে ? আমি প্যারিসের বউ, আমি এই গ্যাঞ্জামের ইশু না । ওকে ? যাও গা বাই "


... যদি এমন হইত মীথ, এমন হত ইতিহাস। তাহলে আমাদের মনে হয় আলাদা করে  এক একটা দিবস লাগতো না।  এনিওয়ে এতদিন হয় নাই । সামনে হবে ।

Friday, August 24, 2018

নাথিং পার্সোনাল

আমি খেলাধুলা কম পারি।
মাঠে ঘুমাইতাম বলে খেলতে গেলে আমাকে দুধভাত নেয়ার ব্যাপারে দুই পক্ষের দলপতির ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাইতো। মুল খেলায় দুধভাত হয়ে থাকার অনেক পেইন আছে। দল জিতলেও মন ভরে না পুরাপুরি। তাই আমি ক্রিকেট বা ফুটবল কোনোটাই বেশি খেলি নাই। সুযোগ পাই নাই বলে খেলা হয় নাই, তাই আগ্রহ ও কিঞ্চিত কম।
টিভির কল্যানে এখন খেলা যতটা না মাঠে, তার চেয়ে অনেক বেশি ঘরের ভেতরে। ক্রিকেটের আইপিএল, বিপিএল, কাউন্টি আর ফুটবলে চ্যাম্পিয়ান্স লীগ, স্প্যানিশ লীগ আর নানা লীগ চলে। তুমুল উত্তেজনার খেলা চলে, উম্মাদনা চলে, কিন্তু সেই উত্তেজনা আর উম্মাদনায় কি সুন্দর মাত্রা টানা থাকে। পেস বোলারের বাউন্সার যখন ব্যাটসম্যানের হেলমেটে বাড়ি মারে, বোলার দৌড়ে গিয়ে ব্যাটসম্যানের পীঠে চাপড় মেরে মিষ্টি হাসে। প্রতিদ্বন্ধীতা যতই থাকুক শত্রুতা তো নাই, তাই প্রচলিত একটা আচরণ আছে, সেটা হল -
নাথিং পার্সোনাল !
ল্যাং মেরে উপ্তা করে ফেলা দেয়া স্ট্রাইকারকে হাত বাড়ায়ে টেনে তুলে ডিফেন্সের প্লেয়ার মাথায় একটু হাত বুলায়ে দিয়ে অই আশ্বাস দেয় - নাথিং পার্সোনাল।
দুই জন একসাথে লাফ দিল হেড করার জন্য, একজন কায়দা করে হেড টা মেরে দিল অন্য জনের বুকে। বুকভাংগা প্লেয়ারকে জড়ায়ে ধরে ঠুয়া মারা প্লেয়ার লাজুক মিষ্টি হেসে জানায় নাথিং পার্সোনাল।
শেখার আছে কত কিছু !!
আমাদের দেশেও এখন লীগ চলে।  ধার্মিকলীগের নিজেদের মধ্যে এই খেলায় কওমী মাওলানারা ইচ্ছা মত আবজাব বয়ান করে যাইতেসে, ফাউল করতেছে। রেফারির বাঁশি আর বাজেনা। সরকার লীগ নানা রকম ভাবে এ্যাটাকে যাইতেসে ঠেলে ঢুকে যাইতেসে হেফাজতের ডি বক্সের ভেতর। কাটায়ে নিয়ে যাইতেসে হেফাজতের ডিফেন্স। মাঝে মাঝে শুধু নাগরিক দাবী বা ধর্মযুক্তিতে কিছু আম পাবলিক কোপ খাইয়া সাইজ হয়ে গেলে মিষ্টি হাসি সহ নাথিং পার্সোনাল জেসচার দেখায়ে আবার আগের নিয়মে খেলা চলতেসে।
ঘাড়ের উপর মাথা একটাই। পড়ে গেলে কেউ ধরবেনা। কোপ মারা পাবলিক নাথিং পাররসোনাল বলে হেটে চলে যাবে। কেউ তাকে আটকাবে না। সমাজ সংস্কৃতি নিয়েও বলতে ভাল্লাগে না। মাথার দিকেই ব্যাথা করে। এই যে হেফাজত লীগ চলতেসে, এই টারময়েলিং ওয়েদারে মুখ বন্ধ করে খেলার লাস্ট বাঁশি পর্যন্ত বইসা থাকাই মনে হয় সুবিবেচকের কাজ হবে।
তবু মাথায় কত জিনিস আসে। আমাদের ধর্মটার নাম ইসলাম কেন ? ক্লাস ফাইভে পড়সিলাম ইসলাম মানে শান্তি। কিন্তু দেশে ধর্মের যেই গরম লু হাওয়া দেখতেছি, এই হাওয়ায় ঘোড়সাওয়ার সেনাদের এই যে এত রকম জিনিস নিয়ে চুলকানী, তা দেখে আসলে বিশ্বাস করা কঠিন- এরা শান্তির ধর্মের অনুসারী। গতকাল খবর দেখলাম। বিরুদ্বমতাবলম্বীদের কতল করা নাকি ওয়াজিব হয়ে গেসে বলে ফতোয়া আসছে। বাহ! কতল না করলে আর শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছেই না , তাই না ?

আল্লাহ পাকের অশেষ দয়া, যে এই জীবন আচার টার একটা নির্দিষ্ট নাম ঠিক করে দেয়া হইসে, আর তা পালটানোর সুযোগ নাই। নাইলে সময়ের প্রয়োজনে এই নব্য ইসলামের সেবকরা এই ধর্মের নাম পাল্টায়া দ্বীনে কতল ( প্রাণ সংহারী ধর্ম) বা দ্বীনে সাইফ ( তরবারীর ধর্ম) নাম দিয়ে ফেলতো। শান্তি মান্তি প্রচারে এদের খুব একটা মন দিল নাই। জুত করে মনের কথা বলতে পারে না।

উনাদের গুর্দা বড়, উনারা ধর্ম হেফাজত করেন, রক্ষা করেন, ধর্ম লাড়েন চাড়েন, ধর্ম নিয়া খেলেন। লীগে বড় বড় ম্যাচে নাইমা ২/১ গোলে আগে পিছে পড়েন তারপর ফাউল করা ওয়াজিব বইলা আগে বাড়েন। নাথিং পার্সোনাল।
সবই ধর্মের লাইগা।
কঠিন এই খেলায় আমরা সবাই দুধভাত...

Wednesday, August 22, 2018

কে বেশী বিকৃত ? ধর্ষক নাকি আমাদের সাংস্কৃতিক চিন্তাধারা !!!

একটা জনগোষ্টির আচার আচরণ, চিন্তা, কল্পনা, আশা বা স্বপ্নের তথা সামগ্রিক আবেগের ছাপ থাকে এর মূলধারার সংস্কৃতিতে।
শিল্প, সাহিত্য, সংগীত এর সবই তো মানুষের বোধ, ভাব, কল্পনার ছাপ।

আমরা বাঙ্গালী জাতি অনেক বিষয়ে লুকাছাপা করতে পছন্দ করি। সামাজিক সৌজন্য বলে একটা পর্দা আমাদের চোখের সামনে টাঙ্গানো থাকে। এই পর্দার ঐ পাড়ে কি আছে, তা আমাদের জানা, কিন্তু তা আমরা মানতে নারাজ। এই পর্দার পেছনে যেমন অনেক ছোট খাট ভান ভণিতা আড়ালে পড়ে যায়, তেমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও আমরা আড়াল করি। এর আবার আমাদের নিজস্ব অর্থবোধক পরিচয় ও আছে । সোজা বাংলায় আমরা
"শাক দিয়ে মাছ ঢাকি"
মাছ যত বড়ই হোক আমরা এক চিমটি শাক এর উপরে রেখে জোরে জোরে বলি, কোন মাছ নাই, শুধু শাক দেখা যায়। মানুষের আবেগের একটা বড় জায়গা জুড়ে আছে যৌনতা। প্রতিটা মানুষ এই অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে পার হবে, এটাই জীবনের রীতি। আমরা বাঙ্গালীরা ভাব করি, আমাদের জীবনে যৌনতা অতি ক্ষীনধারার গুপ্ত আবেগ বিশেষ। এই নিয়া জানা শোনা, কথা বলা, শেখা বোঝার কিছু নাই।

সনাতন পর্দাটানা শিক্ষাব্যবস্থা আর কূপমণ্ডূকতার কারণে বেশিরভাগ বাঙ্গালীর যৌনতার শিক্ষা বলে বিশেষ কিছু নাই। জীবনের অপরিহার্য এই পর্বের সাথে আমাদের হঠাত পরিচয় হয় স্বপ্নদোষের মাধ্যমে। নিয়ন্ত্রণহীন যৌনচাহিদা আর কল্পনার মিশ্রণের এক অতি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া আমাদের জীবনে আসে খুব গোপনে। যেন কি ভীষণ লজ্জার বিষয়। সেখান থেকে আগাতে হয় স্বমৈথুন পর্বে। যৌন প্রক্রিয়ায় বিপরীত লিঙ্গের ভূমিকা সম্পর্কে মূলধারার সংস্কৃতি আমাদেরকে দেয় ভুল ম্যাসেজ।
সমস্ত সিনেমায় দেখা যায় প্রেমে পড়া যুগল কিস করতে নিলে মেয়েটা লজ্জায় মুখ ঘুরায়ে বলে
"যাহ দুষ্টু , আমার লজ্জা করছে।"
বা ধাক্কা মেরে বলে
"ছিঃ কি হচ্ছে এসব, অসভ্য !"
তারপর ফুলে ফুলে টোকা খায়, নায়ক নায়িকা নাচে গায়। আর কিছু করে না।
সিরিয়াসলি ? আর কিছু করে না ?
পোলাপাইন বয়সেই ছেলেরা শিখে, যৌনচাহিদায় মেয়েরা সাড়া দিবে না, কপট "না" বলবে। এই "না" কে পাত্তা টাত্তা দিলে ধরা খাইতে হবে, সারাজীবন আর কিস করা হবে না। তাই জোর কইরা ঘাড় টাইনা মেয়ের অমতে কিস কইরা ফেলতে পারলেই আসল পুরুষ !!!
আর মেয়েরা শেখে, যত ইচ্ছাই করুক, ছেলেদের সাথে নিজের শারীরিক চাহিদার কথা অকপটে বলা যাবে না। এটা অসভ্যতা। তাই যত ইচ্ছাই করুক মুখে "না" বলতে হবে।

তার মানে সম্পুর্ণ ভুল এই ধরনার ভেতর দিয়ে সবাই আগায় পরিণত বয়সের দিকে। যৌনতা হয়ে দাঁড়ায় গোপন বাসনা। কেউ খেয়াল করে নাই, হুমায়ুন আহমেদ নাটকে কাদের নামের চরিত্র কে দিয়ে বলিয়েছিলেন
"ভালবাসা হইল শরমের কথা, কিন্তু এর দরকার আছে"
অবশ্যই দরকার আছে, শারীরিক চাহিদা ভালোবাসাবাসির ভেতর দিয়ে হবে, এটাই তো হবার কথা, সেখান থেকে দম্পতি খুঁজে নিবে সুখ, আমন্ত্রণ জানাবে ভবিষ্যৎ সন্তান কে।
কিন্তু নাটক সিনেমায় গল্পে, গানে সব কিছুতে নারীকে বানানো হয় সোনার হরিণ, তার নিজের শারীরিক চাহিদার তাগিদ নাই, তাই ছেলেরা প্রস্তুত হয়, এই ব্যাপারে যা করার তাদের একারই করতে হবে।

তারপর আসি ভালবাসার কথায়।
এই দেশে ভালবাসা, প্রেম আর বিয়ে এই তিনটাকে এক লাইনে রেখে দেখার নিয়ম।
তাই কাউকে ভালবাসলে তাকে বিয়ে করা লাগবে। বিয়ে করতে রাজী না হওয়া পর্যন্ত মেয়েরা "না" বলতেই থাকবে এটা তো শেখানোই হয়। তাই যৌনতাড়নায় কোন নারীর "না" কে গোনায় না ধরার একটা মনস্তাত্ত্বিক বৈকল্য আমাদের বাঙ্গালী সমাজে খুব শক্তভাবেই আছে।
দূর্বল মনস্তাত্ত্বের উপর দাঁড়ানো বাঙ্গালী পুরুষ, স্বপ্নদোষ, সহবাস আর ধর্ষন এর সীমানা কোনটা যে কোথায় তা ঠাওর করা শেখে না। তাই লাখ লাখ উল্লু প্রজাতির বাঙ্গালী নর-এর লুল যুক্তি বের হয়
মেয়েরা শরীর দেখালে, সেই শরীর তো খুবলে খাবার উপযুক্তই হয়।
নারীর পোষক, নারীর চলন, নারীর শারীরিক নমনীয়তা সব কিছুই তাকে ভালনারেবল করার বৈধতা দেয় বলে এইশ্রেণীর বানর বিশ্বাস করে।
কল্পনায় নারী সংগম চিন্তায় নিয়ন্ত্রণ হারায়ে স্বপ্নদোষ হওয়া যেমন স্বাভাবিক, বাস্তবে নারীর শারীরিক আকর্ষন থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তার উপর ঝাপ দিয়ে পড়া যে অস্বাভাবিক এই ফারাক বোঝার মতন বিবেক জাগানো সংস্কৃতি আমাদের নাই।
টিজ করা আর প্রেম নিবেদন করার ফারাক ধরতে আমাদের সমস্যা হয়।
নারীর সম্মতির অপেক্ষা করার শিক্ষা না পাওয়ায় আমাদের এই কনসেপ্ট ও নাই যে
স্বেচ্ছায় যে যৌনকর্মী যৌনসেবার বিনিময়ে পয়সা নেয়, তাকেও তার অমতে ভোগ করলে সেটা ধর্ষন।
কেউ স্বল্পবসনা হল, কি নগ্ন হল, সে যতক্ষণ সম্মতি না দিচ্ছে ততক্ষণ তো তার সাথে শারীরিক সম্পর্কের কোন দাবী যুক্তি সংগত না।
আমার একটা সুন্দর গাড়ি আছে, এটা নিয়ে আমি রাতে রাস্তায় ঘুরতে বের হলাম,
পাঁচজন মিলে অস্ত্রধরে আমার গাড়িটা ছিনতাই করে নিয়ে যাবার পর, কেউ যদি বলে,
এত রাতে এইরকম গাড়ি বের করসেন আপনারই তো দোষ। তাহলে কেমন শোনায় ?
কিছু ছাগল এইটাও ঘাড় দিয়ে ঠেলতে থাকবে, পর্দা, বোরকা, ইসলাম নানান কুই কুই যুক্তিতে।

আসল কথা হল,
লাভমেকিং ব্যাপারটাই না শেখানোর কারণে আমাদের বেশিরভাগেরই ধারনা নাই যে যৌনতার শুরুও মস্তিষ্ক থেকেই শুরু হবার নিয়ম। যে দেশে ভালোবাসা লিখে, এঁকে, গেয়ে প্রকাশ করাতেও ভণিতা, ফুলে ফুলে টোকা মেরে বুঝাতে হয়, সে দেশে পর্দার আড়ালে কার যৌনজীবন কেমন হবে, তার তো কোন নিয়ম থাকবে না। ফুলে ফুলে টোকা মারতে মারতেও আমরা জনসংখ্যা ১৭ কোটিতে নিয়ে গেসি।

এই দেশে যে সক্ষম, সে বহুগামী হবার স্বপ্ন দেখে, যে অক্ষম সে অন্তক্ষরণে ভোগে।
মূল্য দেয় নারী সমাজ।
নারী ৬ মাস বয়স থেকে ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত ভোগ্যপণ্যই বিবেচ্য হয়। এই নিয়তি বরণ করতে নারীর ভূমিকা থাকা না থাকা আসলে বিবেচ্য না।

এত কথা বললাম, কারণ ধর্ষন সব দেশেই হয়। ১০০ মানুষের মধ্যে এক দুইজন বিকৃত মানুষ থাকা অস্বাভাবিক না। যেটা অস্বাভাবিক সেটা হচ্ছে এই বিকৃতকর্মের সাফাই গেয়ে যারা যুক্তি কুড়ায় সেই সব উপনরের মানসিকতা।
একজন ধর্ষক একটা মেয়ের যে টুকু ক্ষতি করে, তার চেয়ে ধর্ষনে ধর্ষিতার সম্ভাব্য উপযোগিতা যারা খুঁজে, তারা সমস্ত নারী জাতীটাকে ধর্ষন করে খুব অবলীলায়।
এই মানসিকতা ধর্ষকের বিকৃত মানসিকতার চেয়ে আমার কাছে বেশী ভয়াবহ লাগে।

তেঁতুলের চাটনি

 সুপ্রীম কোর্টের সামনে বদরুদ্দীন মাওলাসাপের সাথে মুরিদের দেহা...
- এইডা কি রে ?
- হুজুর, ভাস্কর্য
- নাউজুবিল্লাহ !! মুর্তি ক নালায়েক
- তওবা আসতাগফেরুল্লাহ হুজুর । এইটা মুর্তি ।
- হুম, এখন ঠিক আছে, মেয়েছেলের মুর্তি কেন ?
- হুজুর, এইটা নাকি আইনের দেবী 
- নাউজুবিল্লাহ, দেবীর মুর্তি নি ? ভাঙতে ক
- জী জনাব। অবশ্যই 
- কোনো দেবীর মুর্তি এই মোসলমানের দেশে থাকবে না। ঠিকাসে না ?
- জী জনাব থাকবেনা, রাইত হইলেই সরায় দিতেসি
- সরাইসো ? আলহামদুলিল্লাহ ! এই দেশে কোন মুর্তিই থাকবে না 
- ইয়ে মানে হুজুর, দেব-দেবী ছাড়াও তো মুর্তি আছে, মুক্তিযুদ্ধের স্মারক যেগুলা ? 
- সব, সব ভাইঙ্গা সরা।
- হুজুর বেশি হইয়া যাবে না ?
- বুড়বক, বেশির আর দেখসোস কি ? পয়লা ইসলামের ফিল্টারে ফালায়া মুর্তি সরাবি, তারপরে সেই সুর ধইরা সব মুর্তি ভাঙতে হবে। সব মুর্তি সরাইতে পারলে আল্লাহর নাম নিয়া কোর্ট ভবনই ভাইঙ্গা সরানোর হুক্কাহুয়া শুরু করতে হবে। জমিনের উপর আল্লাহর আইন ছাড়া অন্য আইন চলবে না। আল্লাহর আদালত ছাড়া মানুষের আদালত থাকতে পারবে না। আল্লাহ হইল সুপ্রিম জাজ। তাইলে মানুষের আদালত সুপ্রিম কোর্ট হইলে বেয়াদবি হবে না ?  ঠিক কি না ?
- জী জনাব, ঠিক। সুপ্রিম কোর্ট ও সরাইয়ালবাম।
-হুম, কোর্ট কাচারি সরাইলেই কাজ শেষ না কিন্তু। তারপর সরাইতে হবে পার্লামেন্ট। আইন বানানোর মালিক আল্লাহ পাক। জমিনে সেই আইনের বিধান নিয়া কাজ করবে মজলিশে সুরা। সরিয়া আইনে ইসলামী শাসনব্যবস্থা চলবে। শরিয়তের বিধান দেয়ার জন্য মসজিদই এনাফ। পার্লামেন্ট বানাইয়া আইন -বিধান করা নাফরমানী কিনা ?
- মনে হয় আপনের বিবেচনাই ঠিক। পার্লামেন্ট এরও দরকার দেখিনা ।
- হুম । এইতো বুঝছস। এবার ক, তারপরে কি বন্ধ করতে হবে ? দেখি তোর ইমানি এলেম কতটুক হইসে 
- হুজুর, নির্বাচন কমিশন বন্ধ করতে হইবে নাকি ?
- ধুর বেক্কল, শুধু কমিশন না, পুরা নির্বাচন ব্যাবস্থাই উঠাইয়া দিতে হবে আল্লাহর নাম নিয়া। গণতন্ত্র আবার কী ? মানুষের শাসক নির্বাচন করার ক্ষমতা মানুষের নাই। কথা টা মনে রাখিস। মজলিশে সুরার প্রস্তাবিত খলিফা ছাড়া মুসলিম উম্মাহর আর কোন অভিভাবক হইতে পারে না। বাকি সব ধরনের প্রশাসনিক ব্যাবস্থা হইলো তাগুদ। সব বন্ধ কইরা দিতে হবে। এর পরে বন্ধ করতে হবে মেয়েছেলের লেখাপড়া। মেয়েছেলে ঘরে বাড়িতে কাজ কাম করবে, বাচ্চা কাচ্চা পালবে, স্বামী সেবা করবে আর এবাদত বন্দেগী করবে। তারপরে বন্ধ করতে হবে নাচ, গান, বাইদ্য-বাজনা, নাটক,  সিনেমা, ছবি আঁকা, কবিতা লেখা। মেয়েদের ফ্যাশান করা কাপড় বেচার মার্কেট, বিউটি পার্লার, এনজিও অফিস, টেলিভিশন, ইন্টারনেট... সব বন্ধ কইরা দিতে হবে, স - - - - ব !
কথা বুঝা গেসে ? 
- হুজুর তাইলে খোলা থাকবে কি ?
- মসজিদ আর পায়খানা !!!
এই দুইটার দরকার আছে, তাইনা ? আর মুমিনের কাজ হইল আল্লাহর নামে বন্ধ করার। খোলার কাজ আল্লাহ পাকের। আমরা যত বেশি বন্ধ করতে পারবো, খোদা বেহেস্তের দরজা তত বড় কইরা খুলতে থাকবে, খোলা আর বন্ধের এই হইল ইশারা।
- হুজুর বন্ধ না হয় কইরা দিলাম, নসীবে বেহেস্ত আছে তো আমাগো ?
- আরে নালায়েক আছে কি নাই সেইটা পরে বুঝিস, সব খুইলা মেইলা চল্লেও 
তো দুনিয়ায় ৪ পিস এর উপরে তেঁতুল তোর নসিবে নাই। বেহেস্তের ৭২ টা তেঁতুলের চাটনির আশায় দুনিয়ার সব তেঁতুল গাছ কাইট্টালা । বাকিডা আল্লাহ দেখবো ...

পর্দা আড়লের সেলেব্রেটি

ইলিশমাছের ঝাল চচ্চড়ির সাথে ডাল দিয়া ভাত খাবার সময় যদি সাথে এক টুকরা লেবু থাকে, বাংগালীর ভেতরের রাক্ষস জেগে উঠে। ভাত খাওয়ার আর লিমিট থাকে না। নীল অপরাজিতা-এর বস্তু জগতের নাম সংগীতা আক্তার। দেশের বাড়ি বরিশাল আর বর্তমান অবস্থান ভুতের গলির হোস্টেল। চিপা দিয়ে ঠেলে ঠুলে ফলিত পদার্থবিদ্যায় একটা অনার্স শেষ করে বিসিএস এর চেষ্টায় আছেন। যেহেতু বিসিএস দিবেন তাই সাধারন জ্ঞানের কথা চিন্তা করে দুটো টিউশনি করেন। মাথায় ব্যপক বুদ্ধি আছে, বুদ্ধি কাজে লাগানোর চিপা বুদ্ধি আরো বেশি আছে। ফেসবুকের ময়দানে নিজেকে তেলাপোকা হিসাবে না দেখায়ে কিভাবে বাজপাখি হয়ে যাইতে হয় সেই আইডিয়া তার ভালই আছে।  তার সব স্ট্যাটাস লেখার ঢং আছে । তিনি খুব সেয়ানা মানুষ।  ব্যাক্তিগত কথা বার্তা, কাজ কর্ম ইত্যাদি নিয়া কিছু পোষ্ট দেন না, এতে পাঠকদের শ্রদ্ধা কমে যাবে। তবে নিজের বিভিন্ন সমাবেশে উপস্থিতির ছবি শেয়ার করেন। জনসমক্ষে প্রকাশিত তিনার আদর্শ বিরোধী কিছু লিখলে মারদাংগা উত্তর নিয়ে হাজির হন। যেকোন চলমান ইশু নিয়া ধারালো কথাবার্তা লেখে, মানুষের বাহবা কুড়ায়।

লাস্ট চুমু খাওয়া খাওয়ি নিয়া তার স্ট্যাটাস তো দুই দিন আগে দেয়া। এই স্ট্যাটাস তো লাইক শেয়ার কমেন্ট পড়ে বেশ হিট । প্রতিটি চুমুই স্বর্গীয়, উকি মেরে দেখার অনেক কিছু আছে । শালার, ইশুর এখন কোন মাপ ঝোক নাই। সিজন ভালো। একের পর এক ইশু আসতেসে। একটু যে আরাম করে থাকবো তার উপায় নাই। কম্পিটেটর অনেক।
কয়দিন আগেও এমন হয়েছিল,ছাত্র পড়াচ্ছেন, ডাবমাথা ছাত্র। কিভাবে যে সে স্ট্যান্ডার্ড সিক্সে উঠসে, তার মাথায় ধরে না। সোশ্যাল সায়েন্সে কোশ্চেন হল
- name a freedom fighter, how you know him/her ?
গাধার বাচ্চা, বুদ্ধি খাটাবি না ? বদলের ঘরের বলদ উত্তর লেইখা রাখছে
- our driver selim mia was a freedom fighter. i know him since i born. i'm very proud for him...
আরে গাধা নিজের দাদা বা নানার নাম লেখতে পারোস না ? ড্রাইভার যুদ্ধে গেসে কিনা, কে জানতে চাইসে তোর কাছে? সৃজনশীল প্রশ্নের মানে বুঝে না। এইগুলারে পড়ায়া আরাম আছে ?
এমন টশটশে ইশু নিয়া লেখতে দেরী হয়ে গেল। শালা এই লাইনেও এখন কম্পিটিশান বেড়ে গেসে। দুই মিনিট চোখ সরালেও ইশু ঝেড়ে দেয় পাবলিক। মাঝে মাঝে মন চায় তাদের স্ট্যাটাসের তলে গিয়া কমেন্টে গু-মুত ঢাইলা আসতে। কিন্তু নিজের ইমেজের কথা মাথায় রেখে করা হয় না। নীল অপরাজিতা ফেলনা ফেসবুকার না। নিতান্তই কেউ নিজের স্ট্যাটাসে মতামতের জন্য না ট্যাগাইলে সে লেখে না। যাক সেই কথা। কেউ একজন তারে কয়লা লোপাটের স্ট্যাটাসের নীচে ট্যাগাইয়া লেখসে,নীল অপরাজিতা, নীরব কেন ? আপনি কি চুপ করে থাকবেন ?
খুবই চিন্তার কথা, চুপ থাকা যাবেনা। যার ফলোয়ার - ফ্রেন্ড মিলায়ে ৯০ হাজারের বাহিনীরে চাঙ্গা রাখতে হয়। তার তো চুপ থাকা মানায় না।  এইসব ইশুতে একটু ক্রিয়েটিভ হইতে হয়, যেহেতু কোনো স্পেসিফিক এটাকিং পয়েন্ট নাই, তাই তীক্ষ্ণ আক্রমন ও নাই। হালকা ভাসা ভাসা হওয়াই ভালো। তিনি লিখলেন
কেউ খেয়ে দেয় কয়লা
কেউ দিয়ে যায় বাঁশ
বাকিটা ইতিহাস ...
সেলুকাস......।
এভাবেই তিনি ভার্চুয়াল জগতে বেচে থাকেন। সম্ভবত এই গল্পটার আড়ালে প্রারম্ভিক অথবা শেষ গল্প  নীল অপরাজিতাদের জানা থাকেনা বলেই নিজেদের ফেম কিনতেই অনলাইনে (ফেসবুকে) আসেন । বাট সাফাইস ট্যু স্যা দ্যাট  এইসব ওল্ডস্কুল এলিমেন্ট এখন আর নাই। স্মার্টনেস থাকে কর্মে আর আচরনে। যারা ভেবে থাকেন স্মার্টনেস পোষাকে-চাপাবাজিতে তাদের মস্তিস্কে বিদ্যার তারতম্য আছে।
 লিটারেলী চোখে পানি নিয়ে কিবোর্ড চাপতেসি।  লজ্জায় নাকি গর্বে জানিনা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আমার হাতে থাকা পেয়াজের মত, আমি নিজে  বাচ্চাদের মত বোকা হয়ে তাকায়ে থাকতে থাকতে চোখে পানি চলে আসছে।  ফ্যান ফলোয়ারের একটা বিশাল সংঘবদ্ধ গ্রুপ থাকে আইডি প্রমোট করতে। এই ধারণা নিয়ে রাস্তায় নামা অচেনা শক্তি কারা আমি বলবোনা। পলিটিকাল ভন্ডামী থেকে ধার করে নেয়া হয় এসকল ধারনা।এতদিন যেসকল সেলেব ইশুকে টিস্যুর লেভেলে ব্যাবহার করেছেন সময়মত তারাও আবার ছবিতে ইশ্যু হয়ে যাবেন। DW-তে ২০১৫ তে এ নিয়ে একটা লেখা দেই। প্রকাশের ১৩ দিন পর সরিয়ে ফেলা হয়। মাইনাসে মাইনাস প্লাস খেলা খেলতে ছাগু  গ্রুপে দিতেই তারা লুফে নেয়। কিন্তু দূর্ভাগ্য ঐদিনই কে বা কারা যেন আমার আইডিখানা ডেস্ট্রয় করে দেয়।

ভেজা কয়লা আগুনে পোড়ালে কেমন জানি একটা টক টক গন্ধ হয় । পোড়া কয়লার গন্ধ অনেকের কাছে কটু লাগে। কাঠ কয়লা ভেজা হলে ধোঁয়া হয় বেশি, সেই ধোঁয়া টুকু আবার ঝাঁঝালো। একটা সময় রাস্তায় চলতে গিয়ে হুট করেই কোনো কিছু পোড়া ধোঁয়া নাকে গেলেই বিরক্তিতে কপাল কুঁচকে উঠে। আমাদের বুকের কষ্টের চেয়ে ফেসবুকে কষ্ট বেশি নয়। আমার মনের হাসির চাইতে ফেসবুকের খুশি মূল্যবান নয়। আমাদের কেবল ভিতরের এই চিত্রপটের দিকে ভালো করে তাকাবার অবসর থাকে না। তাই সাধারন হয়ে থাকুন, সাধারন হয়ে বেচে থাকাই অসাধারন কাজ।

Saturday, August 18, 2018

প্রেম জিনিসটা বড় অদ্ভুত
কারণে বা বিনা কারণে আবেগ চিন্তাকে ছেয়ে ফেলে। তারপর সমস্ত একাগ্রতা এক হয়ে প্রেমের পরিণতির দিকে ঠেলে দেয় পাত্র বা পাত্রীকে। বিলিয়ন মানুষের এই পৃথিবীতে বিলিয়ন প্রেম কাহিনী অন্তত তাই বলে। তবে দেশপ্রেমের বেলায় ওয়ার্কিং প্রসেস টা উল্টা। আগেই পরিণতি, তারপর এর সাথে ধীরে ধীরে আবেগ যুক্ত হয়। মানে আরেকটু খুলে বললে ব্যাপারটা এরকম, যে আমরা যেমন অনেক মানুষের ভীড়ে আগে একজনকে দেখে মুগ্ধ হই, তারপর তার এটা ভাল্লাগে, ওইটা সুন্দর লাগে, তার জন্য মন টানে, তারে না দেখলে উচাটন লাগে। তারপর তাকে আপন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। দেশের বেলায় আগে বাছাবাছি করা ছাড়াই একটা দেশে জন্ম নিতে হয়। তারপর দেশের এই টা , ওইটা ভালোবেসে দেশকে আপন করার মধ্যে দিয়ে দেশপ্রেম গভীর হয়।

যদি জন্ম নেয়ার আগে দেশপ্রেম দেখায়ে দেশ পছন্দ করে জন্ম নেয়ার সুযোগ থাকতো তাহলে অবস্থাটা কি হইত ? কল্পনা করতে পারি না। তবে কোনো দেশে ঢুকতে গেলে ভিসা ইন্টারভিউ বা ইমিগ্রেশানে যেভাবে কথা বলে দেশে ঢোকার অনুমুতি নিতে হয়। যদি তেমন ব্যাবস্থা হত তাহলে কি রকম হতে পারতো আন্দাজ করা যায়।


ধরা যাক, জনৈক জন্মপূর্ব আত্মা বসে আছে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশান কাউন্টারে। জন্ম নেয়ার আগে আলমানেক ঘেঁটে বাংলাদেশকে পছন্দ হয়েছে আত্মার। তিনি এখন জন্ম নেয়ার আগে ফাইনাল ইন্টারভিউতে এসেছেন।
 তাদের মধ্যে কথা হচ্ছে......
অফিসার জিজ্ঞেস করলো
- আপনি শিওর আপনি বাংলাদেশে জন্মাতে চান ?
- হুমম, ঠিক শিওর না, ভালই তো লাগে, ট্রপিকাল কান্ট্রি। থাকার জন্য আরামদায়ক হবার কথা না !!...?
- কান্ট্রি ট্রপিকাল, কিন্তু পপুলেশান কিন্তু হাই ডেন্সড। ১৭০ মিলিওন, টেম্পারেচার ৩৫-৩৮ ডিগ্রী রাউন্ড দা ইয়ার, তবে বাতাসে ডাস্ট, কেমিকেল পার্টিকেল, কার্বন মনোক্সাইড কিন্তু অনেক বেশি।কোন গ্রিন পলিসি নাই। গাছ কেউ লাগায় না, কাটে শুধু। যাবেন ?
- ইয়ে মানে, ম্যানেজ করা যাবে তো এসি ফ্যান চালায়ে,
- আরে রাখেন মিয়া, ইলেক্ট্রিসিটি নিয়া হিমশিম অবস্থা। এখন পর্যন্ত কার্যকর প্রোডাকশান পলিসি হয় নাই, জোড়া তালি দিয়া চলতেসে। বাই দা ওয়ে, ট্রান্সপোর্টেশানের অবস্থা কিন্তু ভাল না বলে দিচ্ছি।
- কেন ? রাস্তা ঘাট নাই ?
- আছে, তবে সেটায় গাড়ি চালাইবেন, নাকি নৌকা চালাইবেন এইটা আপনার বিবেচনা। জ্যাম চিনেন ?  জ্যামেই কাইটা যাবে আয়ুর ৪ ভাগের এক ভাগ।
- আচ্ছা সেইটা বুঝলাম। কষ্ট করে হাটবো কিছুদিন, তারপর কাজকর্ম করে, ভাল একটা গাড়ি কিনে ফেললে তো আর ঝামেলা নাই, কি বলেন ?
- হেঃ মাথা খারাপ নাকি আপনার? হাটবেন ফুটপাতে, পাছার ভিতরে মটর সাইকেলের চাকা ঢুকে যাবে। হর্নে কান বয়রা হয়ে যাবে, আর রাস্তা পার হইতে গেলে অনাবিল, আবাবিল, সালসাবিল, জাবালে নুর, পিপড়ায় গুড়, হরতন, রুইতন, ইস্কা , টেক্কা , এনা, হানিফ, জালিম, কলিম নানা রকম বাস ক্যাত করে পিষে চ্যাপ্টা করে দিবে। আর গাড়ি কিনবেন ? চালাবেন কি দিয়া ? তেলের পাম্পে ওজন আর কোয়ালিটির মনিটরিং নাই, গ্যাসের পাম্পে লাইন দিয়ে থাকতে হয় ৩ ঘন্টা । মাঝে মাঝে গ্যাস থাকে না। চালাতে পারবেন কম, চললেও গর্তে গর্তে আছাড় খাবেন, পুটকী ফেটে আট টুকরা হয়ে যাবে, বসে বসে গ্যাস পোড়ায়ে সরকারকে ট্যাক্স দিতে থাকবেন। বাই দা ওয়ে, গাড়ি কিনবেন ও কিন্তু আড়াইগুণ দামে, মাইন্ড ইট অটোমোবাইল প্রোডাকশান হয় না।
- ধুর আপনে শুধু শুধু ভয় দেখাচ্ছেন। এত খারাপ হয় নাকি ? সুন্দর সবুজ একটা দেশ। নদী নালা আর মাঠ ঘাটে ভরা, খেতের ফসল আর নদীর মাছ খেয়ে তো সব দুঃখ ভুলে যাবার কথা।
- আরে, স্ক্রু ঢিলা নাকি ? নদীর মাছ !!! ফরমালিন চিনেন ? ফসল ? কার্বাইডের নাম শুনছেন ? একদম শরীরের ইয়ে হয়ে যাবে পেটে গেলে পরে । ইটের গুড়া দিয়ে মশলা, টিশুপেপার দিয়ে ছানার সন্দেশ খাবার জন্য কোন লেভেলের জিহবা লাগে, আইডিয়া আছে ?  খাল বিলের নাম ও মুখে আইনেন না। অইসব দখল হয়ে দোকানপাট হয়ে গেসে। আর মাঠ বলে কিছু নাই। দুই তিনটা আছে, সেগুলায় জাতীয় দল ক্রিকেট খেলে। ভাল কথা, শিক্ষা,  চিকিৎসা ব্যাবস্থা নিয়া জানার আছে কিছু ?
- বলেন শুনি
- ওকে, শিক্ষার কথা বলি। টাকা থাকলে ডিগ্রী আসতেই থাকবে। টাকা আর পাওয়ারই ঠিক করে দিবে, আপনি আর আপনার বংশধর কোন স্কুলে পড়বে, কত জিপিএ পাবে, কতদুর উচ্চশিক্ষা নিবে। মেধা না থাকলেও সমস্যা নাই। ক্লাস ওয়ানের ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে বিসিএস পর্যন্ত কোচিং আছে, আর সব পরীক্ষার প্রশ্ন পর্যন্ত আউট হবার ব্যাবস্থা আছে। মেধা ম্যাচ না করলে অন্য দেশে মাইগ্রেশানের রাস্তা খোলা আছে। কেউ আটকাবেনা । আর চিকিৎসা ? মনে করেন যতক্ষণ সৃষ্টিকর্তা আপনাকে জানে না মারতেসে, ততক্ষণ বাংলাদেশের কোনো ডাক্তার আপনাকে মারতে পারবেনা । মেডিসিনে কিছু অনুমোদিত দুই নাম্বারী আছে, তবে সার্জারীর রিস্ক নিতে পারেন, এ্যাডভেঞ্চার ভাইবা।
- মানে এই দুইটাও খারাপ ? এনিওয়ে , কি আর করা । তবে খুব কালচার্ড নেশান জানতাম।
- ও , কালচার ? হেঃ হেঃ আছে কিছু। পয়লা বৈশাখে খুব মজা মাস্তি হয়, তবে আপ্নার ওয়াইফকে একটু সামলায়ে রাখতে হবে।  মানে পোলাপাইন টাইনা শাড়ি টাড়ী খুলে ফেলে মজা করে। কাপড়চোপড় নিয়া বেগানা অফবাদ আসতে পারে মাঝেমধ্যে। আর এন্টি পার্টি বোম টোম ফুটায়ে দেয়, সেদিকটাও মাথায় রাখতে হবে।সারা বছর উৎসব লেগেই আছে, তবে কার উৎসবে, কে গেল, কেন গেল, কোন উৎসব সঠিক, কোনটা বেঠিক এসব নিয়া ক্যাচাল আছে কিছু। আর উৎসবের সময় বাজার খরচা সামান্য বেড়ে যাবে বুঝছেন্না ?
- অহ আচ্ছা। চুপচাপ নিজের মত করে থাকা তো যাবে, নাকি ?
- চুপ থাকবেন মানে ? চুপ থাকলেই তো তলায়ে যাবেন। ক্রমাগত দাবী করে যাবেন, এই দাও , ওই দাও, এরে মারো, ওরে ঝুলাও, এরে চাইনা, ওরে আনো, তুই নেস কেন ? আমারে দে।। ইত্যাদির ভেতরে নিজেকে যুক্ত করতে হবে। অর এলস।
- অর এনিথিং এলস ?
- অর এলস আপনি কাউন্টার পার্টির ট্যাগ খাইয়া যাবেন। হয় ছাগু নয় নাস্তিক, হয় বলদ নয় সুশীল, ঘাগু নাইলে মঘা কিছু একটা বলে অপজিশন আপনাকে টিপে দিবে।
- কি বলেন ? পার্সোনাল স্কেলেও এত অপজিশান ?
- আরে বলেন কি মিয়া । আমাদের বাংলাদেশে আমরা নিজেও নিজের অপজিশান । ২০ মেগাবাইট ইন্টারনেট কিনে অর্ধেক দিয়া ন্যাংটা মেয়ের ছবি দেখি, বাকিটুক দিয়া গরম কোনো হুজুরের ওয়াজ শুনি। মুখে বলি সোনার বাংলা, হাতে পাইলে টান মেরে সোনা ছিড়ে ... ইয়ে মানে, বুঝেনই তো.....
- সিকিউরিটির খুব অভাব নাকি ?
- সামান্য থাকলেই না অভাব মাপা যাই। সিকিউরিটি ধরে নেন কাগজে আছে, রিয়েলিটিতে নাই। যে কোনো বয়সে মেয়েরা রেপড হয়ে যাবে। যে কোনো ইশুতে মারা খেয়ে যাবেন, সিকিউরিটি চাইতে গেলে, ল এন্ড অর্ডার এত বড় এক ডান্ডা ভরে দিবে যে, মুখ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যাবে।সিকিউরিটি নিয়া বেশি হাউকাউ ও করলে অসুবিধা ক্রসফায়ার বলে কঠিন সিকিউরিটি দেখায় দিবে।
- এত এত সমস্যা নিয়া গভর্মেন্ট কি করে ?
- এইবার আসছেন আসল কথায় ।
বাংলাদেশের গভর্মেন্ট মাঝে মাঝে পুরান খেতা বের করে কান্দে,
আর কিছু গদীদখল করা খাটাস দাঁত দেখায়ে হাসে।
আর কিছু করেনা।
- এই দেশটাকে ভালোবাসার মত একটা জিনিসও কি নাই ?
- আছে, হাতে হাতুড়ী নিয়া পলিটিক্স এ নাইমা যাবেন। পুরা দেশটারে নিজের সম্পত্তি মনে হবে। আর নিজের জিনিস কে না ভালোবাসে বলেন?

ভীত সন্ত্রস্ত আত্মা খুব কাচুমাচু করে বলে
- ভাই, আমি তো না বুঝে বাংলাদেশ সিলেক্ট করে ফেলসিলাম, আন্ডু করার ব্যাবস্থা আছে ?
- একবার সিলেক্ট করে ফেল্লে আন্ডু করা যায় না। তবে বাই পাস নিতে পারেন। নরকে !
সেটাও খারাপ না। মাল্টিপল টর্চারের চেয়ে ওয়ান ওয়ে টর্চার বরং বেটার।
হাতে নরকের এন্ট্রি পাস নিয়ে খুশি মনে আত্মা বলে
- থ্যাংক ইউ ভাই। বাঁচাইলেন।