একটা
সময় লিখলে কিছু কমেন্ট পেতাম। সেখানে বলা হত, আপনি যা জানেন না, তা নিয়ে
কেন লিখবেন? শুরুতে ব্যাপারটায় বিরক্ত লাগত। আমি যা ইচ্ছা তাই নিয়ে লিখতে
পারি। ব্যক্তিস্বাধীনতা আছে। কিন্তু ধীরেধীরে বয়স বাড়ল। অল্পবিস্তর
অভিজ্ঞতা বাড়ল। শেষ মুহুর্তে এসে আমার মনে হল, সেদিনের কথাগুলো সত্য ছিল।
আসলেই আমার সব বিষয়ে লেখা উচিৎ নয়, সব বিষয়ে কমেন্ট করাও উচিৎ নয়। কারণ
আমার লেখা অনেক মানুষ পড়ছেন। আমাকে যারা পছন্দ করেন তাদের বিশাল একটা অংশ
অবশ্যই আমার দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছেন। হতে পারে আমার লজিক্যাল কিন্তু ভুল
ব্যাখ্যাও তারা সঠিক ভেবে নিবেন। এরপর এই ভাবনা দ্বারা যতগুলো ভুল কাজ হবে
তার পুরো দায়টা কিন্তু আমার। হয়তো তিনি কখনোই বলবেন না, আমার কাছ থেকে জেনে
ভুল করছেন। যারা ভুক্তভোগী হবে তারাও হয়তো জানবেন না, এই ভুলের শুরুটা
আমিই করে দিয়েছি।
ব্যাক্তিজীবনে যারা আমায় চিনেন তারা জানেন বাটারফ্লাই ইফেক্ট বলে টার্মটা আমি প্রায়ই ব্যবহার করি। ব্রাজিলে একটা প্রজাপতি ডানা ঝাপটালে এর প্রভাবে আমেরিকার টেক্সাসে টর্নেডো হতে পারে কী না! সামান্য প্রজাপতির ডানা কোথায় ঝাপটাচ্ছে (কজ) অথচ তার কতবড় প্রভাব (ইফেক্ট) পড়ছে কতদূরে। দেখতে হাস্যকর কিন্তু সিরিয়াস পর্যায়ের বিজ্ঞানসম্মত এই টার্মের আবিষ্কারক একজন ম্যাথম্যাটিশিয়ান (গণিতবিদ এবং আবহাওয়াবিদ এডওয়ার্ড লরেঞ্জ)। ম্যাথমেটিকসকে বলা হয় বিজ্ঞানের কংকাল। যারা পুরো ভিত্তিটা তৈরি করে। যাদের ছাড়া বিজ্ঞান অচল। তিনি ম্যাথম্যাটিশিয়ান হয়ে নিশ্চয় বাটারফ্লাই ইফেক্ট নামের কোন হাস্যকর তত্ব আবিষ্কার করেননি।
ব্যাপারটা খুব সহজ। কোন সিস্টেমে সামান্য ত্রুটি (যেটাকে ত্রুটি হিসেবে গণ্য করতে চাই না আমরা, এতই ক্ষুদ্র ত্রুটি) একদিন পুরো সিস্টেমটাকে বদলে দিতে পারে। লরেঞ্জ আবহাওয়ার পুর্বাভাস দিতে একটা মান ব্যবহার করেছিলেন। মানটি ছিল ০.৫০৬ । দশমিকের পর তিনঘর পর্যন্ত। সংখ্যাটি আরো বড় ছিল। দশমিকের পর আরো অংক ছিল। ০.৫০৬১২৭ । তিনি পূর্বাভাস তৈরি করলেন দশমিকের পর তিন ঘর নিয়ে। আবার ছয় ঘর নিয়ে আরেকটা পূর্বাভাস করলেন। আশ্চর্যের ব্যাপার হল দুটোর রেজাল্ট আসল ভিন্ন। যত কমই হোক না কেন, দুটো রেজাল্টে বিশাল পার্থক্য দেখা গেল। আপাত দৃষ্টিতে এটা ত্রুটি মনে হয়নি। কিন্তু এত সামান্য একটি ঘটনাও ফলাফল বদলে দিতে পারে। [পরবর্তীতে তিনি একটা পেপার লেখেন। সেখানে বাটারফ্লাই ইফেক্টের নাম দিয়েছিলেন- ‘ডিটারমিনিস্টিক ননপিরিয়ডিক ফ্লো’ (Deterministic Non-period Flow)]
আপাত দৃষ্টিতে কিছু ঘটনা ঘটবে। যেগুলো বিশৃংখল। খুবই ছোট ব্যাপার। একটার সাথে আরেকটার যোগ নেই। কিন্তু যেদিন ফলাফল ঘটবে, সেদিন দেখা যাবে এই ঘটনাগুলো আমার ভবিষ্যত কীভাবে আমূলভাবে বদলে দিয়েছে।
আজ ঘুম থেকে জেগে একজন প্রগতিশীল ব্যাক্তির (দীর্ঘদিন আমার টাইমলাইনে আছেন) পোস্ট দেখলাম। তিনি একজন ফিমেল সেলেব্রেটির ছবি দিয়েছেন, আবার পাশেই টেনিসবল বাস্কেটবল জাতীয় কয়েকটা শব্দ লিখেছেন।ব্যাপারটা হয়তো তিনি মজার ছলেই করেছেন।
কিন্তু বাটারফ্লাই ইফেক্ট কী বলছে এখানে? অন্তত দুইশ জন মানুষ তার স্ট্যাটাস দেখবে। বিশজন মানুষ হয়তো কিছুই ভাববে না। কিন্তু বাকীরা? একশজন মানুষ রসিয়ে কমেন্ট করবে। পঞ্চাশজন মানুষ মনে মনে গালিগালাজ করবে কিন্তু কমেন্ট করবে না। বিশজন মানুষ কমেন্টে পর্দা করার কথা বলবে। মনের দুঃখ কমেন্টে খারাপ ভাষায় প্রকাশ করবে। বাকী দশজন হয়তো নিজেদের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে আরো বেশি ধর্মান্ধ বা রক্ষনশীল হবে !
বাটারফ্লাই ইফেক্ট আসলেই কী হবে?
এবার কিছু প্রশ্ন করি! আপনাদের ফ্যামিলিতে যদি কোন মহিলার ছবি সোস্যাল মিডিয়া থেকে থেকে সংগ্রহ করে পাশে যৌন উত্তেজক কিছু কথাবার্তা লিখে দেয়া হয় তখন হয়তো তার বাইরে রাস্তায় অথবা বন্ধুমহলে চলাফেরা করতে লাঞ্চিত হতে হয়। এরপর সে সোস্যাল মিডিয়া অথবা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেনা। নিজের স্বাধীন চলাচল অনেকখানি গুটিয়ে ফেলবে। তার শিক্ষাজীবন বাধাগ্রস্থ হবে।
প্রজাপতির ডানার ঝাপটায় আসলে তারাই।আপনি আজ যেটা না জেনে ছড়িয়ে দিবেন সেটা একদিন মহীরুহ খারাপ হয়ে আপনার পরিবারে আশেপাশে, দূরের এলাকায় ইফেক্ট সৃষ্টি করবে। যদি আপনি এই ধরণের মানুষ হোন, প্লিজ সাবধান হয়ে যান।আপনি আজ যা প্রচার করছেন আপনারই সন্তান একদিন আফসোস করবে। অথচ সে জানলই না, তারই পিতা নিজার অজান্তে বাটারফ্লাই ইফেক্ট তৈরি করেছিল। আদতে যেটা তার পিতা বুঝতেই পারেনি কিন্তু অনেকদিন পর সেটা ঝড়ের মতো ঘটে গেছে।
ব্যাক্তিজীবনে যারা আমায় চিনেন তারা জানেন বাটারফ্লাই ইফেক্ট বলে টার্মটা আমি প্রায়ই ব্যবহার করি। ব্রাজিলে একটা প্রজাপতি ডানা ঝাপটালে এর প্রভাবে আমেরিকার টেক্সাসে টর্নেডো হতে পারে কী না! সামান্য প্রজাপতির ডানা কোথায় ঝাপটাচ্ছে (কজ) অথচ তার কতবড় প্রভাব (ইফেক্ট) পড়ছে কতদূরে। দেখতে হাস্যকর কিন্তু সিরিয়াস পর্যায়ের বিজ্ঞানসম্মত এই টার্মের আবিষ্কারক একজন ম্যাথম্যাটিশিয়ান (গণিতবিদ এবং আবহাওয়াবিদ এডওয়ার্ড লরেঞ্জ)। ম্যাথমেটিকসকে বলা হয় বিজ্ঞানের কংকাল। যারা পুরো ভিত্তিটা তৈরি করে। যাদের ছাড়া বিজ্ঞান অচল। তিনি ম্যাথম্যাটিশিয়ান হয়ে নিশ্চয় বাটারফ্লাই ইফেক্ট নামের কোন হাস্যকর তত্ব আবিষ্কার করেননি।
ব্যাপারটা খুব সহজ। কোন সিস্টেমে সামান্য ত্রুটি (যেটাকে ত্রুটি হিসেবে গণ্য করতে চাই না আমরা, এতই ক্ষুদ্র ত্রুটি) একদিন পুরো সিস্টেমটাকে বদলে দিতে পারে। লরেঞ্জ আবহাওয়ার পুর্বাভাস দিতে একটা মান ব্যবহার করেছিলেন। মানটি ছিল ০.৫০৬ । দশমিকের পর তিনঘর পর্যন্ত। সংখ্যাটি আরো বড় ছিল। দশমিকের পর আরো অংক ছিল। ০.৫০৬১২৭ । তিনি পূর্বাভাস তৈরি করলেন দশমিকের পর তিন ঘর নিয়ে। আবার ছয় ঘর নিয়ে আরেকটা পূর্বাভাস করলেন। আশ্চর্যের ব্যাপার হল দুটোর রেজাল্ট আসল ভিন্ন। যত কমই হোক না কেন, দুটো রেজাল্টে বিশাল পার্থক্য দেখা গেল। আপাত দৃষ্টিতে এটা ত্রুটি মনে হয়নি। কিন্তু এত সামান্য একটি ঘটনাও ফলাফল বদলে দিতে পারে। [পরবর্তীতে তিনি একটা পেপার লেখেন। সেখানে বাটারফ্লাই ইফেক্টের নাম দিয়েছিলেন- ‘ডিটারমিনিস্টিক ননপিরিয়ডিক ফ্লো’ (Deterministic Non-period Flow)]
আপাত দৃষ্টিতে কিছু ঘটনা ঘটবে। যেগুলো বিশৃংখল। খুবই ছোট ব্যাপার। একটার সাথে আরেকটার যোগ নেই। কিন্তু যেদিন ফলাফল ঘটবে, সেদিন দেখা যাবে এই ঘটনাগুলো আমার ভবিষ্যত কীভাবে আমূলভাবে বদলে দিয়েছে।
আজ ঘুম থেকে জেগে একজন প্রগতিশীল ব্যাক্তির (দীর্ঘদিন আমার টাইমলাইনে আছেন) পোস্ট দেখলাম। তিনি একজন ফিমেল সেলেব্রেটির ছবি দিয়েছেন, আবার পাশেই টেনিসবল বাস্কেটবল জাতীয় কয়েকটা শব্দ লিখেছেন।ব্যাপারটা হয়তো তিনি মজার ছলেই করেছেন।
কিন্তু বাটারফ্লাই ইফেক্ট কী বলছে এখানে? অন্তত দুইশ জন মানুষ তার স্ট্যাটাস দেখবে। বিশজন মানুষ হয়তো কিছুই ভাববে না। কিন্তু বাকীরা? একশজন মানুষ রসিয়ে কমেন্ট করবে। পঞ্চাশজন মানুষ মনে মনে গালিগালাজ করবে কিন্তু কমেন্ট করবে না। বিশজন মানুষ কমেন্টে পর্দা করার কথা বলবে। মনের দুঃখ কমেন্টে খারাপ ভাষায় প্রকাশ করবে। বাকী দশজন হয়তো নিজেদের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে আরো বেশি ধর্মান্ধ বা রক্ষনশীল হবে !
বাটারফ্লাই ইফেক্ট আসলেই কী হবে?
এবার কিছু প্রশ্ন করি! আপনাদের ফ্যামিলিতে যদি কোন মহিলার ছবি সোস্যাল মিডিয়া থেকে থেকে সংগ্রহ করে পাশে যৌন উত্তেজক কিছু কথাবার্তা লিখে দেয়া হয় তখন হয়তো তার বাইরে রাস্তায় অথবা বন্ধুমহলে চলাফেরা করতে লাঞ্চিত হতে হয়। এরপর সে সোস্যাল মিডিয়া অথবা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেনা। নিজের স্বাধীন চলাচল অনেকখানি গুটিয়ে ফেলবে। তার শিক্ষাজীবন বাধাগ্রস্থ হবে।
প্রজাপতির ডানার ঝাপটায় আসলে তারাই।আপনি আজ যেটা না জেনে ছড়িয়ে দিবেন সেটা একদিন মহীরুহ খারাপ হয়ে আপনার পরিবারে আশেপাশে, দূরের এলাকায় ইফেক্ট সৃষ্টি করবে। যদি আপনি এই ধরণের মানুষ হোন, প্লিজ সাবধান হয়ে যান।আপনি আজ যা প্রচার করছেন আপনারই সন্তান একদিন আফসোস করবে। অথচ সে জানলই না, তারই পিতা নিজার অজান্তে বাটারফ্লাই ইফেক্ট তৈরি করেছিল। আদতে যেটা তার পিতা বুঝতেই পারেনি কিন্তু অনেকদিন পর সেটা ঝড়ের মতো ঘটে গেছে।
No comments:
Post a Comment