Friday, October 25, 2019

মোচলমান মোচলমান ভাই

মোচলমান মোচলমান ভাই ভাই কয়া পাঞ্জাব মুলুকের মোছুয়ারা যখন আমাগোরে বগলে লয়া দেছভাগ কইরা খুসিতে ফাল দিতাছিল, তহনে, আমাগো ঠাঁটারী বাজারের তাল মিছরীর দোকানদার শরাফত আলী বিছুইনের ডান্ডা দিয়া কান চুল্কাইতে চুল্কাইতে কইছিলো, এত ভাই ভাই বালা না। বাইয়ের হোগা বাইয়েই মারে, এরলেইগাই কয় " ভাইরে ভাই"।
বাহাত্তুর সালে বংগবন্ধু দেসে আইলো। সোনার বাংলা স্বাধীন হইয়া পিতারে ফেরত পাইলো। ধর্ম নিরপেক্ষতার সংবিধান লেখা হইল। বাংলাদেশে, হিন্দু - মোচলমান- বড়ুয়া খ্রীস্টান সবতে সবতের জাতী ভাই হইল। ফিরিংগী মাউরার পোলারা রাইতের আন্ধারে বইয়া পড়লো ষড়যন্ত্রের নকসা বানাইতে। বংগবন্ধুরে পুরা খান্দান্সুদ্ধা মাইরা ফালাইলো। মোছুয়া পাকিস্তানীগো রুটি, গোস,, আংগুর, মেওয়া খাওয়া সিপাহসালার সাবে কান্দেরতে রাইপেল নামায়া থুইয়া কোদাল লইয়া হায়রে খাল কোপাইতে লাগলো। কালা চশনা পিন্দা হায়্রে কোপ আর কোপ। সেই তামসা দেইখা ধোলাইপারের ইদ্রিস মেইকারে কয়, "উচিত কাম হইচে, বাংগালীর হোগায় ডান্ডা না মারলে, লাইনে থাকেনা।". আরো ম্যালা মাইনসে ইদ্রিসের মতন খুসি ভি হইসে, সোলোগানও ভি দিছে। কিন্তু কতায় আছেনা? 
তুমি ঝুলো গাচের ডাইলে,
আমি চলি খালে,
তুমার আমার দেখা হবে
মরনেরও কালে।
অইরকম আরকী ঘটনা ঘইটা গেলো। সিপাহসালারের শইল্লে গুলি ভইরা দিয়া পথ কিলিয়ার কইরা গদীতে ফাল দিয়া বইয়া পড়লো এক হাইমানে। আবার হেই পুরান সুরে বীন বাজাইলো- মোচলমান কইয়া চোক্ষে সুরমা আর গায়ে জুব্বা লাগায়া আবারো মছুয়া পাইক্কাগো দীলের খায়েসে পায়েস রান্ধার চুলায় আগুন চড়লো। তার বাদে বহুত দিন গত হইলো, পদ্মা নদীর পানি সুকায়া গেল। ধোলাইখাল হয়া গেল ধোলাইপাড়। মাইনসের জবান উচা হইল। বুদ্ধি নাইমা গেল। রাজনীতির নামে লাইনে বেলাইনে ম্যা----লা পলিটিক্স হইল। মাগার বাংগালী হইল সেয়ানা জাতি। ঠিকই ৪২ বছর আগের পিছলা হিসাব চুকায়া ফেরত লইলো শরাফত আলীগো ওয়ারিশান। মাগার মছুয়াগো প্যাটের বিত্তে পাক দিয়া উঠলো।
কী অইতাছে! 
কী অইতাছে!! 
কইয়া কত মাতবরে যে চিক্কুর দিল হিসাব নাই। দেসের বিত্রে একটা লড়াচড়া পইড়া গেলগা। টুপি মাতায় থুইয়া রাজনীতি করার যে আরামে গোলামের পুত আজম আর মইত্তা রেজাকারেরা ভোগ কইরা গেচে, সেই আরামের লোভে নানান কিসিমের বাইদ্য বাজনা বাজলো দেশের নানা দিকে। এক মোচলমান ধর্মের মার্কা লইয়া রাজনীতি করতে করতে ৫০ সাল পার কইরা দিচে দেসের মানুষ। অহনও আক্কলের দিসা ঠিক নাই।
হুনতাছি মগের পুত রোহিংগারা অহনে লাখে লাখে জমায়েত হইয়া বংগাল মুলুকের মাটি ছাইড়া না যাবার তাল করতাছে। ৫০ বছর পরেও অই একই মোচল্মান মোচলমান ভাই ভাই থিউরী লইয়া কেউ কেউ চামে চিকনে পলিটিক্স খেলতে চাইতাছে। তয় এই কতাখান হুইনা নারিন্দার বাদাইম্মা মাহাবুব কয়,
লেখা পড়া না জানার এই অইচে বিপদ। অহনো পাবলিকে বুজেনা,
দেশর পরিচয় মনে, ধোনে না।
যাউজ্ঞা, কেরু খাওয়া বাদাইম্মার কতায় কেউ দিলে চোট লিয়েন না। তয় রোহিংগা গোরে একখান খত দিবার কইচে আমাগো পরীবাগের হালিমা আপায়। আপায় কইয়া দিছে,
টাইম মতন চুহা আর মাচ্ছর সাফ করনের কামে বাংগালী খুব হুসিয়ার। তেইল্লাচুরার জায়গা চোকির তলায়। চকির তলার তে মাতা বাইর করনের লগেই চপ্পলের  মাইরে খালাস।
মুরুব্বীরা কইচিলো -
পিন্ডিতে জনম যার, ইছামতিতে মরণ!
বংগাল মুলুকের মেহমানদারীর যেমন সুনাম আচে,
টাইম মতন গাবুইরা মাইরের ও কইলাম হিস্টিরী ম্যালা।
অহনে ক্ষ্যান্ত দেই।

Wednesday, October 23, 2019

বিখ্যাত ‘চিরকুমার’ যাঁরা

“চিরকুমার” শব্দটার মধ্যে অদ্ভুত এক নস্টালজিয়া! এক জীবনে যারা বিয়ে করেন না তাদেরকে বলা হয় চিরকুমার। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি ব্যক্তিজীবনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হননি। তারা আমাদের প্রিয়মুখ। মেধা, যোগ্যতা, জনপ্রিয়তা ও খ্যাতিতে স্ব স্ব ক্ষেত্রে নক্ষত্রতুল্য। বলা হয়ে থাকে বিয়ে হচ্ছে বুদ্ধিমত্তার বিরুদ্ধে কল্পনার জয়।
ইতিহাসের খলনায়ক হিসেবে পরিচিত জার্মানীর অ্যাডলফ হিটলারকে সবাই জানত ঘরোয়া জীবনহীন একজন চিরকুমার মানুষ হিসেবে। স্বাধীনচেতা এই যোদ্ধা তাঁর পুরো জীবন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও রাষ্ট্রের জন্য উৎসর্গ করেছেন।
যে মহান ব্যক্তির নামে সর্বোচ্চ সম্মাননা পদক “নোবেল পুরষ্কার” এর জনক আলফ্রেড নোবেল ব্যক্তিজীবনে অবিবাহিত ছিলেন। প্রখ্যাত বিজ্ঞানী নিউটন, গ্যালিলিও কেউই বিয়ে করেননি।
হাতে আঁকা বিখ্যাত চিত্র মোনালিসা’র স্রষ্টা লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি, দেকার্তে, ডাল্টন, , ইমানুয়েল কান্ট, নিৎসে, কাফকা, শোপেনহাওয়ার, আলেঙ্জান্ডার পোপও বিয়ে করেননি।রোমান বক্তা ও লেখক সিসেরো বিশ্বাস করতেন, একজন মানুষ কখনই একই সঙ্গে ভালো দার্শনিক ও স্বামী হতে পারে না। বিখ্যাত রসায়নবিদ জন ডালটনকে বন্ধুরা বলত- বিয়ে করবি না ? তার উত্তর ছিলো -আমার সময় নেই।
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও পরমাণুবিজ্ঞানী এ পি জে আবদুল কালাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, বিখ্যাত টাটা গ্রুপের শিল্পপতি রতন টাটা, অভিনেতা সালমান খান ও রাহুল বোস, এরা সবাই চিরকুমার। রাহুল গান্ধী বলেন, ‘বিয়ে করলে সন্তান হবে। আমি লক্ষ্যচ্যুত হয়ে যাব। আর চাইব আমার সন্তান যেন আমার আসনে অধিষ্ঠিত হয়।’ রাজনীতি নিয়েই জীবনটা কাটিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা তাঁর। ইংরেজ দার্শনিক , অর্থনীতিবিদ আলোকিত যুগের অন্যতম চিন্তাবিদ, এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার জন লকও একই পথের পথিক। অচেনা নারীর সঙ্গে সম্পর্কটা কেমন হবে—এমন ভাবনা থেকে বিয়ে করেননি ৭৫ বছর বয়সী শিল্পপতি রতন টাটা। কেন বিয়ে করলেন না? এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী (৮৮) বলেছিলেন, ‘বিয়ের জন্য সময় পাইনি। ‘ভারতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পের জনক ও অন্যতম জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামও চিরকুমার। পরমাণুবিজ্ঞানী হিসেবে তিনি যতটুকু সফল, বিয়ে করলে নাকি তাঁর অর্ধেক সাফল্যও অর্জিত হতো না—এমনটাই এক বন্ধুদের বলেছিলেন তিনি।
মতিউর রহমান সিদ্দিকি বলেছিলেন, অতি প্রতিভাবানরা বিয়ে করেন না। পৃথিবীর বেশিরভাগ অতি মেধাবী ব্যাক্তিরাই ছিলেন অবিবাহিত। তারা অধিকাংশই তাদের যৌনাকাঙ্ক্ষা অবদমন করেছেন।
উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ আধ্যাত্মিক পুরুষ হযরত শাহজালাল (রঃ.) ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে সিলেটে আগমন করেন। তিনি ১৩৪০ খ্রিস্টাব্দে ৬৯ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। তিনি ছিলেন অবিবাহিত। বাংলার বিখ্যাত জনহিতৈষী, দানবীর হাজি মুহাম্মদ মহসীন সংসারত্যাগী হিসেবে অবিবাহিত ছিলেন সারাজীবন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক আতাউল গণি ওসমানী ছিলেন চিরকুমার। কিন্তু তিনি কেন বিয়ে করেন নি, সে বিষয়ে কেউই তার কাছ থেকে সদুত্তর পায়নি।
বাস্তববাদী ও আপোষহীন প্রখ্যাত লেখক আহমদ ছফা একাকী জীবন কাটিয়েছেন। অনেক সময় তিনি এ নিয়ে হাস্যরসও করতেন। বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান এই তালিকারই মানুষ। সারাজীবন তিনি প্রকৃতি, নিসর্গ, স্বপ্ন ও সম্ভাবনার ছবিই এঁকেছেন। রংতুলি দিয়ে জীবন্ত করেছেন অসংখ্য বিমূর্ত নারী চরিত্রকে। কিন্তু নিজের বাস্তব জীবনের সঙ্গে জড়াননি কোনো নারীকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি সদ্যপ্রয়াত বুদ্ধিজীবী ডঃ মনিরুজ্জামান মিয়া, সবার প্রিয়মুখ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সাদী মুহম্মদ,সিলেটের ভাষাসৈনিক, শিক্ষাবিদ ও বু্দ্ধিজীবী অজিতকুমার গুহ চিরকুমার ছিলেন সারাজীবন ।ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন মুন্সিগঞ্জের জিতেন ঘোষ। চিরকুমার এই মানুষটি সারা জীবন কৃষক ও মেহনতী মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করেছেন।
একসময় বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে বিয়ে না করার প্রবণতা বেশি দেখা যেত। এদের অনেকে মনে করতেন, বিয়ের কারণে সমাজ-বিপ্লবের কাজে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তবে এখনো বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের অধিকাংশ নেতা চিরকুমার। দল থেকে কোনো বাধা না থাকলেও এ দলের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ ক’জন নেতা অবিবাহিত রয়েছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান এখনো চিরকুমার।
ফোর্বস সাময়িকীতে সাম্প্রতিক তালিকায় স্থান পাওয়া বিশ্বের ১ হাজার ৬৪৫ জন কোটিপতির মধ্যে এখনো অবিবাহিত আছেন তালিকার ৩ শতাংশ। শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন অবিবাহিত কোটিপতি এবং তাদের সম্পদের পরিমাণ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো : ড্রপবক্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মার্কিন ইন্টারনেট উদ্যোক্তা ড্রিউ হসটন। ফোর্বসের হিসাবে তার সম্পদের পরিমাণ ১০২ কোটি মার্কিন ডলার।
ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ব্রাজিল বংশোদ্ভূত অবিবাহিত এদুয়োর্দো সেভারিনের মোট সম্পদ ৪০১ কোটি মার্কিন ডলার। টুইটারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান জ্যাক দোরসির সম্পদের পরিমাণ ২ দশমিক ২০০ কোটি মার্কিন ডলার।
আমাদের এই সময়ের চিরকুমার গীতিকবি শহীদুল্লাহ ফরায়জী বিয়ের ঘোর বিরোধী। আড্ডায়-অনুষ্ঠানে তাকে যতই খোঁচানো হোক না কেন তিনি কখনোই তার বিয়ে না করার রহস্যের জাল উন্মুক্ত করেন নি।
সে যাই হোক,ক্ষণস্থায়ী জীবনে সুখ বা প্রশান্তিই বড় কথা। কেউ কেউ হয়তো একাকিত্বের মাঝেই জীবনের অমূল্য সুখ খুঁজে পেয়েছেন, হয়তো এটিই তাঁকে মহান করে তুলেছে, কারণ একা থাকতেও যোগ্যতা লাগে।