Sunday, March 31, 2019

পলিটিক্যাল প্রিভিউ

হেভেনে সময় শান্তিতেই কাটে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা যে লায়লা-মজনু, দেবদাস-পার্বতী, রোমিও- জুলিয়েটকে পুনর্মিলিত করেছেন; সেখানে নিত্যদিন খুটখাট লেগেই আছে। এদের প্রতিদিনের দাম্পত্য কলহ এমন একটা রূপ পরিগ্রহ করেছে যে; সৃষ্টিকর্তা রীতিমত ‘প্রেম’ বিষয়টি পুনর্ভাবনার প্রকল্প নিয়েছেন। গান্ধীজী এই প্রকল্প প্রধান। বিশেষজ্ঞ নিয়ে ভাবনা নেই; নেহেরু আছেন। বঙ্গবন্ধু এই কমিটিতে থাকতে রাজি হননি। বলেছেন, বরং কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে নিন। কবি মানুষ; এগুলো বোঝেন ভালো। লায়লা- পার্বতী- জুলিয়েটের পিতার নামের কাছে বঙ্গবন্ধু উনার নামটা লিখে দিতে বলেছেন। খবরটা শুনেই চিন্তায় পড়ে গেছেন তাজউদ্দীন, এরা তিনজনই তাহলে ১৫ অগাস্ট জন্মদিন পালন করবে; এতো জানা কথা। এরকম ঘটনা একজন ঘটিয়েছে এরি মাঝে। বঙ্গবন্ধু বলেই দিয়েছেন, এদের যদি বনিবনা না হয় উজবুকগুলোর সঙ্গে; আমার বাড়ী পাঠিয়ে দিও; মেয়ের আদরে থাকবে। অতো প্রকল্প দরকার কী!

গান্ধীজী ভারতে মোদীর প্রধানমন্ত্রী হবার পর থেকেই বিষণ্ণ; ভেবেছিলেন প্রেম সংস্কার প্রকল্পে ব্যস্ত হয়ে ভুলে যাবেন হিন্দু ভারতের ছবি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলছেন, পুরো উপমহাদেশের একটা পলিটিক্যাল প্রিভিউ করা উচিত। জরুরী বৈঠক ডাকুন।

দেবুদা বেহেশতের প্রেসক্লাবে মিট দ্য প্রেস করে, কলকাতার তাপস পাল, লাহোরের ইমরান খান আর নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। সেন্টার ফর পারু ডার্লিং(সিপিডি)র কাজই এই। সাম্যবাদী ও ভোগবাদী এই দুটো ফ্রন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ‘তৃতীয় শক্তি’ তৈরীর চেষ্টা। পারু- অশান্তির জীবনে তৃতীয় চুমুক দেবুদার খুব জরুরী।

গান্ধীজী জিন্নাকে আর ইকবালকে ডেকে পাঠান, কী বটিকা দিয়ে এলে যে ইমরান আজ তালিবান খান! তোমাদের অনুশোচনাহয়না! উভয় কবিই নিরুত্তর। মওলানা আবুল কালাম আজাদ দুঃখ করে বলেন, জিন্নাহ তোমার ঐ ইনডিভিজুয়ালিজমটাই ক্ষতি করেছে। এই রোগ তুমি লন্ডন থেকে নিয়ে এসেছিলে। গান্ধীজী ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। কী করলে জিন্নাহ; সব সমস্যার মূলে তোমার পাকিস্তান। ইকবাল একটু রুহ আফজায় গলা ভিজিয়ে গজল গায়। মাথা নীচু করে বেরিয়ে যায় জিন্নাহ, বাইরে সরোজিনী নাইডু গাড়ী নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। জিন্নাহকে নিয়ে ‘টেক টু’ ক্যাফেতে চলে যান। সেখানে আগেই আসর জমিয়ে বসে আছেন নেহেরু। লায়লা-পার্বতী- জুলিয়েটকে তৃতীয় শক্তির মজনু-দেবু-রোমিওর বিরুদ্ধে ক্ষেপাচ্ছেন। সরোজিনী জিন্নাকে বলেন, উল্টোদিকের ক্যাফে ফ্লোতে যাই চলো।

বঙ্গবন্ধুর বাড়ীর বৈঠকখানায় গম্ভীরমুখে বসে সুভাষ বোস। সত্যজিত রায় একপাশে বসে ফেসবুকিং করছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এসে পৌঁছুলেন। একটু পর শেরে বাংলা ঢুকলেন। হঠাত তার ফোন আসে। গান্ধীজীর ফোন, বাঘাদা এই ‘লাহোর’ প্রস্তাব করার কী দরকার ছিলো! এখন ইমরান তালেবান খান হয়েছে সেই লাহোরেই। শেরে বাংলা কথা না বাড়িয়ে বলেন, আজ একটু বাংলার সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত। পাকিস্তান নিয়ে জিন্নার সঙ্গে কথা বলেন। ভাসানী বাড়ীর ভেতর থেকে নামাজ পড়ে বৈঠকখানায় ঢুকেন। সবাইকে চা দিয়ে যায় খন্দকার মুশতাক। বঙ্গবন্ধুর একটি বাড়ী একটি খামারে মুশতাক গরু-ছাগল চরায়, অবসরে চা দেয়; তাকে দোজখ থেকে ডেপুটেশানে আনা হয়েছে। দোজখের লোকজন মুশতাকের নানা ঘিড়িঙ্গিতে অতিষ্ট হয়ে আবেদন করে চিড়িয়াটিকে সরিয়ে নেবার জন্য।

নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমানকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সুভাষ বোস বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞেস করেন, ওটা এরকম মায়া সিটি হয়ে গেল কেনো যে মানুষ গুম হয়ে যাচ্ছে; আর শামীম ছেলেটা এমন উদ্ধত কেন। ভাসানী ফোড়ন কাটেন, দেখতে শুনতে তো নতুন বাংলার বাঘ। শেরে বাংলা বলেন, মওলানা সাহেব ওকে বাগ বলেন। বাঘ ঐ একটাই আপনার সামনে বসে। মুশতাক একটা আস্ত কাঁঠাল নিয়ে আসে। ভেঙ্গে খেয়ে ফেলেন বাঘাদা। বঙ্গবন্ধু বলেন, বোস দা আমরা এতোগুলো লোক এখানে; আমাদের কারো আচরণে উদ্ধত ভাব দেখেছেন। সুভাষ বোস মাথা নাড়েন; না তো। বঙ্গবন্ধু বলেন, সময়ের সঙ্গে বিনয়-ভদ্রতা বিষয়গুলো উবে যাচ্ছে। কী করবো আমরা। সত্যজিত রায় হাসেন, মুজিব ভাই মায়াসিটি নিয়ে যত কান্ড নারায়ণগঞ্জ লিখবো কীনা ভাবছি।

জ্যোতিবসু ঘরে ঢুকেই করজোড়ে ক্ষমা চান দেরীর জন্য। বঙ্গবন্ধু হাসেন, এই যে মায়াসিটির আশে পাশের এলাকার লোক এসে পড়েছেন। সুভাষ বোস সরাসরি আলাপে চলে আন, জ্যোতি বাম ফ্রন্টের একি হাল!

জ্যোতিবসু বলেন, যেই যায় লংকায় সেই হয় রাবণ। সব তো চোর; জনপ্রিয়তা ধরে রাখবে কী ভাবে? বঙ্গবন্ধু যোগ করেন, আমিও যেমন একটা চোরের খনি আর দরবেশ পেয়েছি। সত্যজিত রায়কে বঙ্গবন্ধু জিজ্ঞেস করেন, এই তাপস পালটা কে; কথা বার্তা তো পাকিস্তানের টিক্কা খানের মতো। নারীর প্রতি এমন অমর্যদাকর কথা একজন শিল্পী কি করে বলে। সত্যজিত রায় হাসেন, একে শিল্পী বলে চিনিনা; বাংলা ছবির সোনালী যুগের পতনের পর যাত্রার মতো কতগুলো ফিল্মের হিরো ছিলো সে; এখন এর বিদ্যা বুদ্ধি বুঝতেই পারছেন। জ্যোতিবসু এর সঙ্গে যোগ করেন, এর নেত্রী ক্ষমতাটা শুনেছি ইংরেজীতে বেশ ভালো। সবাই হো হো করে হেসে ওঠেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দুঃসময় কবিতা পাঠ করার ভঙ্গিতে বলেন, কি এক সবুজ সুন্দর আমার সোনার বাংলা রেখে এলাম; আর কী হয়ে গেল। সাংস্কৃতিক মান এতো অধঃগামী হয় কী করে! এ ঘরে ক্ষমতাকে নিয়ে এলে তো পনেরো সেকেন্ড বসা যাবে না।

কবি নজরুল তার বাসার লনে বসে দেবুদাকে বোঝাচ্ছিলেন, পার্বতীর দুর্ব্যবহারে দুঃখ না পেতে। নারী একটু কষ্ট দেবেই। দেবুদা কেঁদে ফেলে, নজুদা আমি আর কতো বড় হবো! নজরুল ইসলাম অনুরোধ করেন, প্লিজ দেবু কেঁদোনা। এরি মাঝে একটা পুরো টিস্যু বক্স শেষ করেছো। এমন সময় চন্দ্রমুখীর ফোন, একটু আসবে দেবুদা, খুব ভয় করছে তাপস পাল ফোন করেছিল। বলেছে বাম ফ্রন্টকে সাপোর্ট করো চন্দ্রলোক, আমি তোমার এপার্টমেন্টে তৃণমূলের র‍্যাপ সিঙ্গার পাঠাবো।

দেবদাস ভয় পায়, তাপস পালতো মরেনি, সে পৃথিবী থেকে লং ডিসট্যান্স কল করেছে; তারতো মাথার ঠিক নেই; আত্মহত্যা করে চলে আসে যদি চন্দ্রের কোন ক্ষতি করতে।

কবি নজরুল বলেন, শোন এই পাপস পালটা এতো সহজে মরবেনা; এ জাতীয় লোককে যমও ঘৃণা করে। ওখানেই দেখবে সে শেয়াল-কুকুরের খাদ্য হবে।

Monday, March 25, 2019

ঘুড্ডি আছে অথচ, সুঁতোর টান নেই

বেহেশতে সৃষ্টিকর্তা চেষ্টা করেছেন জগতে সমাজের চাপে এক হতে না পারা প্রেমাত্মাদের সাত পাকে বেঁধে দিতে। দেবদাস-পার্বতী, লায়লা-মজনু, রোমিও-জুলিয়েটের বিয়ে হয়েছে। সুন্দর একটা বাসা, বিরহ ভাতা সবই পাচ্ছেন তারা।

লায়লা মেয়েটা ভালো। তবে সামান্য কালো। এ কারণে মজনুর চোখ পড়েছে ব্রিজিত বার্দোর দিকে। আর ব্রিজিত জানেন কী ভাবে মজনুদের লেজে খেলাতে হয়। লায়লার সবই ভালো;কিন্তু মেয়েটা একেবারেই ঢং ঢাং জানে না। কেমন বোন বোন লাগে মজনুর কাছে। অন্যদিকে ব্রিজিত যেন লরেলাই, যাদু হ্যায় নেশা হ্যায়। বেহেশতের কতজনই তার প্রেমে আকুল। জওহরলাল নেহেরু তার পুঁজিবাদী পার্টির কাজ ফেলে দৌড়ে বেড়ায় ব্রিজিত বার্দোর পিছে। আর ওদিকে লেডি মাউন্টব্যাডেন তো আছেই। ব্রিজিত বার্দোর অবশ্য মজনুকেই ভাল লাগে। ঘোড়েল মেয়েরা বোকা প্রেমিক ভালবাসে। নেহেরুর ওপর চালাকিটা আর বেহেশতে কাজে আসছে না। লায়লা একা একা বসে রুমাল সেলাই করে। দোয়া পড়ে ফুঁ দেয়। এই রুমাল পকেটে রাখলে যেন মজনু বেপথু না হয়।

তাই কী হয়। ব্রিজিত বার্দো বলে কথা। মজনুকে দিয়ে লন মোয়িং করায়। মানে মজনু ব্রিজিত বার্দোর বাগানের মালি হয়ে যায়। আর ওদিকে দুঃখিনী লায়লা অস্নাত-অভুক্ত-অতৃপ্ত যেন বেঘুম রাতের সাথীকে খুঁজছে।

বিদ্যাসাগর যেহেতু বেহেশতেও বিধবা সেবা নিকেতনের অধ্যক্ষ; উনি একটু যা লায়লার খোঁজ খবর নেন। তবে উনি তো শুধু বিদ্যার গল্প করেন। সাগরের কোনগল্প নেই তার কাছে; তাই লায়লা ক্রমশঃ ইন্টেলেকচুয়াল হয়ে ওঠে। উদাসীন মজনুর লায়লারাই হয়তো ইন্টেলেকচুয়াল হয়।

গান্ধীজীর অবশ্য একটা নজর রয়েছে লায়লার দিকে। উনি ডান হাতটি জুলিয়েটের কাঁধে রাখার ব্যাপারটা সেটল করে ফেলেছেন। বাম হাতটি খুব ইচ্ছা ছিল চন্দ্রমুখীর কাঁধে রাখার। চন্দ্রমুখী সটান না করে দিয়েছে। এতো নাটক করে ভারত বিভাগ ঠেকাতে পারে নি যে লোক তার সঙ্গে এতো খেজুরে আলাপের ইচ্ছা নাই চন্দ্রমুখীর।জীবনে দুজন দেবদাস দরকার নাই তার । একটা নিয়েই অনেক ভুগেছে মেয়েটি।

গান্ধীজী লায়লার মাঝে প্রতিশ্রুতি খুঁজেছেন। ভারতের কোন নারী আর গান্ধীজীর ধারে কাছে ভেড়ে না।লায়লা রাজী হয়ে যায়। গান্ধী মজনুর চেয়ে অনেক কেয়ারিং।জুলিয়েট- লায়লা নিয়ে গান্ধীজী সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করেন।

রোমিও বেহেশতে এসে রীতিমত ক্যাসানুভা হয়ে গেছে। অড্রে হেপবার্ণ থেকে পারভিন ববি সব ফিল্ম স্টারের সঙ্গেই দহরম মহরম তার। হেভেনের মনোচিকিতসক অবশ্য দেবদাস-পার্বতী, লায়লা-মজনু, রোমিও-জুলিয়েটকে ম্যারেজ কাউন্সেলিং করছে। কাজ হবে বলে মনে হয়না।

বেহেশতের শান্তি নিকেতনে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাঠের বারান্দায় বসে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোকে বোঝান,
ওকাম্পো ম্যারেজ ইজ দ্য এন্ড অফ লাভ। দেখো ঐ জগত সেরা প্রেম-প্রতীকদেরবেহাল অবস্থা।

ওকাম্পো ভালোই ছিল। সুচিত্রা সেন বেড়াতে এসে এই বিয়ের পোকাটা ঢুকিয়ে দিয়েছেন । উনি বলেছেন, উত্তমকেও আমি সাফ জানিয়ে দিয়েছি ফোর টোয়েন্টি চলবে না। নিবন্ধিত বিয়ে ছাড়া সুচিত্রা সেখানে নাই। উত্তম বিয়ের কথা শুনে আর একবারো ফোন করেনি। শোনা যায় লেডি ডায়ানার বাসায় তার নিয়মিত যাতায়াত। তাতে বিপদে পড়েছেন বেচারা রবি ঠাকুর, ওকাম্পো খালি বিয়ে বিয়ে শিখেছে ঐ সুচিত্রার কাছে। বিচিত্র এই পাবনার মেয়ে। তাকে যে কেউই পাবে না।

জিয়াউর রহমান হেভেনে খাল কেটে বেড়ান। তাকে ম্যারেজ ব্যুরো থেকে বলা হয়েছিল তার ব্যাপারে জেন অস্টিনের আগ্রহ আছে। কিন্তু জিয়া এই মহিলার খুব পেঁচানো মেয়েলী উপন্যাস পড়ে বিরক্ত। উনি অপেক্ষা করছেন ঢাকার জেন অস্টিনই আসুক। সুন্দরী নারী মানেই বাঁকা চুল। সোজা করা অসম্ভব। আর কিউবান রাম-স্নুকার্সক্লাবে সময় ভালোই কাটে তার। নেহেরু তাকে বেশ পছন্দই করে। সকালে উঠে খালকাটা শুরু করা কঠিন। কারণ নেহেরুর রাতে একদম ঘুম হয়না। পাখিরা কেউ ফোন ধরে না। লেডী ব্যাডেনও আবার সাফ সাফ বলে দিয়েছেন, এতো বড় আকারের ভারত নিলে, প্রধানমন্ত্রী হলে; আমাকে কী দিলে নেহেরু। এভরি ডে কান্ট বি এবাউট ইউ।
নেহেরু সটকে পড়ে। তবে হাল ছাড়ার পাত্র সে নয়, মেরিলিন মনরোকে ফোন লাগায়।

মনরো বলে চলে এসো। আমার বাসায় পার্টি আছে। অনেকেই আসছে।

নেহেরু বাসায় ফিরে একটু ফ্রেশ হয়েই মনরোর পার্টিতে যায়। জিন্নাহ একটা টেবিলে সরোজিনী নাইডুর সঙ্গে গল্প করছে। চে গুয়েভারার বাহুলগ্না প্রীতিলতা। চে এখনল তার নির্দেশে ওঠে আর বসে। কোথায় গেছে সেই লৌহমানব, ঠিকই আছে, যে মেয়ের নাম প্রীতি তার লঙ্গে লতা; চে গুয়েভারা সেইখানে আটকে যেতেই পারেন।

গান্ধীজী জুলিয়েট আর লায়লার কাঁধে হাত দিয়ে খিল খিল করে হাসছেন। নাত্থুরাম গডসে তার পা টিপছে। এটা তার নিয়মিত দন্ড।

বঙ্গবন্ধু এলেন; মুখে সেই পাইপ, সবাই চমকে তাকায়। মেরিলিন মনরো ব্যস্ত হয়েওঠে। জুলিয়েট গিয়ে অটোগ্রাফ নেয়, প্রীতিলতা গিয়ে কদমবুচি করে, লায়লা গিয়ে মজনুরবিরুদ্ধে নালিশ করে, অড্রে হেপবার্ণ একটু নাচতে আগ্রহ প্রকাশ করেন, মিসেস মুজিব পিছেই ছিলেন। উনি প্রশ্রয়ের হাসি হেসে বলেন, অসুবিধা কী একটু নাচলে!

গান্ধীজী মিসেস মুজিবের নীল চোখের প্রশংসা করেন। পেছন থেকে আইভী রহমান হেসে বলেন, লেট মি হ্যান্ডেল হিম ভাবী। জিল্লুর রহমান হাসি লুকাতে কলিম শরাফীর সঙ্গে গল্প জুড়ে দেন।

এমন সময় খুব ভাব নিয়ে ঢুকেন ইন্দিরা গান্ধী, যেন তার রূপে ঝলসে যাবে গোটা মেহেফিল। অথচ সবাই ব্যস্ত পার্টিতে। গান্ধীজী মিসেস মুজিব আর আইভী রহমানের সঙ্গে সেই অতীতের গল্পগুলো পুনরাবৃত্তি করেন।

অভ্রে হেপবার্ণ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বসে লম্বা শলাকা সিগেরেট ধরিয়েছে।বঙ্গবন্ধুর চারপাশে জুলিয়েট-লায়লা-মেরিলিন মনরো।

চে একটু কিউবান ডার্টি ডান্স সালসা করছেন ৭২ জন হেভেন ডান্সারের সঙ্গে। নেহেরুও নাচে জমে গেছেন।

শুধু ইন্দিরা কাউকে পাচ্ছেন না গল্প করার। শেষ পর্যন্ত মওলানা ভাসানীর সঙ্গে বসে পরিবেশ দূষণ ও গার্বেজ ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কথা বলেন।
এমন সময় রবীন্দ্রনাথ আসেন ওকাম্পোকে নিয়ে। ওকাম্পোর মুড অফ। ঐ যে বিয়ের ইস্যুতে জটিলতা। মনরো এগিয়ে যান কবিকে অভ্যর্থনা জানাতে।

হঠাত দেবদাস হাজির হয় পাঁড় মাতাল অবস্থায়; পার্বতীর অত্যাচারে সে এখন বিভ্রান্ত। পার্বতী পার্টিতেও আসেনি; কী একটা সিরিয়াল আছে টিভিতে। ওটা তার দেখতেই হবে। চন্দ্রমুখী এগিয়ে আসে। দেবদাসকে একটা সোফায় বসায়। কাগজী লেবুর শরবত এনে দেয়।

রবিদার মনে হয় দেবুটাই হ্যাপি, ওরতো চন্দ্রমুখী আছে।
শুধু কেউ নেই আমার, ওকাম্পোর হয়েছে সুচিত্রার ঢং।
চন্দ্রমুখীই ভালো; অযথা সুঁতোর টান নেই, অথচ ঘুড্ডি আছে।